Pages

Friday, January 8, 2016

কল্যাণের মৌসুমের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে

ভাবছি,,,
কিভাবে কিভাবে যেন জীবনটা হারিয়ে গেল। শৈশব থেকে যেন ‘ঐ সামনের রশিটা ধরতে পারলেই সফল’ এমন একটা ভাবনা নিয়ে, একটা তাড়া নিয়ে দৌড়াচ্ছি। কিন্তু একটি রশি কোনভাবে ধরার পরই যেন আরেকটি রশি এসে হাতছানি দেয়। জীবনের এতগুলো বছর পর মনে হচ্ছে যেন ‘আল্লাহর রশি’টি দেখতে পেলাম, বুঝতে পারলাম, চিনতে পারলাম। ২৫/৩০-এ মানুষের অনেক সাফল্যের কথা শুনি। অনেক অবদান তাদের এই পৃথিবীর জন্য। অথচ জীবনে আসা ‘সমস্যা’গুলোর সমাধানের সাধনাতে কখন যে ২৫/৩০ পেরিয়ে গেল, বুঝতেই পারলাম না। তেত্রিশের কোঠায় এসে সংসারী হয়ে পূর্ণতাগুলো বুঝতে শুরু করি। তারপরও কতগুলো দিন চলে গেল এই ভেবে যে, এবার সাজাবো, এবার গোছাবো। জীবনটাকে নিয়ে আফসোসের পাল্লাই ভারী দেখছি…।

এমন যখন ভাবনাগুলো, তখন দু’চোখে একমাত্র পথ ‘সিরাতুল মুস্তাকীম’। এ রাজপথে চলা এবং দু’পাশের পথিকদেরকে ডাকার মাঝেই আজকালের আনন্দ, অর্জন। অর্থের পেছনে অনেক দৌড়ে দেখেছি, নির্দিষ্টের বাইরে তাকে ছুঁতেও পারিনি। তাই ব্যর্থ হয়ে নয়; বরং ভুল ভেঙ্গে এবার কল্যাণের পেছনে দৌড়াতে শুরু করলাম। তেমনি এক কল্যাণের মৌসুমের দ্বার প্রান্তে দাঁড়িয়ে আজ। রমাদ্বানুল মুবারাক ১৪৩৬ হিজরী।
কল্পনায় উঁকি দেয় এমনি কোন এক রমাদ্বান, হয়তবা তা ষষ্ট হিজরী অথবা নবম হিজরী। যখন প্রিয় নবী (সা) এই মদীনাতে ইসলামের পূর্ণ ইসলামী জীবন ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করে তা বিশ্বময় ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। হয়তবা তিনশ’, নয়শ’ বারো-পনরশ’ হিজরীর কোন রমাদ্বান। মুসলিম শাসকগণ হয়তবা কল্যাণে অথবা নিজেদের আয়েশী জীবন নিয়ে মশগুল। তেমনি হাজারো কল্পনাগুলো এসে যায় সময়ের এই বর্তমান সীমানায় দাঁড়িয়ে। জীবনের অতীত রমাদ্বানগুলো এসে জড়ো হয় মনের কোণায়। কি করতে পেরেছি, কি পেলাম আর কি হারালাম; এসব হিসাব নিকাষে যেন ঝরে পড়ে এক অব্যক্ত বেদনা। যা কিছু অর্জনের সাধনা করেছি, তা কি আদৌ পেয়েছি? পেয়ে থাকলে সে অর্জন কি আদৌ ধরে রাখতে পেরেছি? যতটা গভীরভাবে বুঝা, অনুধাবন করা উচিত ছিল কল্যাণের এ মহান মৌসুমকে, তার কতটুকু স্পর্শ করতে পেরেছি? আজকের এই দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে কতটা প্রস্তুতি আছে আমার? আমি প্রস্তুতি নেই বা না নেই, থেমে থাকবেনা এ পূণ্যের স্রোত, চলতে থাকবে কালের পরিক্রমায়। যে যা নিতে পেরেছি, তা সে পেল, বাকীটা চিরন্তনী সময়মের মত বহমান থেকে গেল।
আজকাল প্রতিটি কাজে কেবলি মনে হয়, সঠিকভাবে বুঝতে না পারলে কোন কাজেরই গভীরে পৌঁছানো যায় না। আর গভীরে পৌঁছাতে না পারলে আন্তরিকতা ধরে রাখা যায় না। আন্তরিক হতে না পারলে একনিষ্ঠতা অর্জন সম্ভব হয় না। একনিষ্ঠতা অর্জিত না হলে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। তদুপরি রয়েছে প্রেরিত পুরুষ(সা)-এর পদ্ধতির সঠিক অনুসরণ।

No comments:

Post a Comment