Pages

Friday, January 8, 2016

তাবলীগ জামাতের ব্যাপারে আরবের বিখ্যাত আলেমের অভিমত

*************************************************************
( কারো তর্ক করার ইচ্ছা থাকলে আগে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন এবং পোস্টের শেষে কিছু মৌলিক কথা বলা আছে সেগুলো পড়ে যদি তর্ক করতে ইচ্ছে হয় তখন কমেন্ট করতে পারেন – )
_________________________________________
শায়খ আব্দুল আযিয আব্দুল্লাহ ইবনে বায রাহঃ এর অভিমত –
“”””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””

(১) শায়খ এওয়ায ইবনে এওয়ায কাহতানির নিকট লিখিত পত্রে শায়খ বিন বাজ রাহঃ বলেন –
লোকদের মধ্যে তাবলীগ জামাত সম্পর্কে ভিন্ন মত পাওয়া যায়। কেউ তাদের প্রশংসা করে আবার কেউ তাদের সমালোচনা করে। কিন্তু আমরা ‘নজদ’ ও অন্যান্য স্থানের আমাদের অনেক বিশ্বস্থ ভাইদের কাছ থেকে জামাত সম্পর্কে পুর্ণ খবর নিয়েছি। তাদের কেউ জামাতে শরীয়ত বিরোধী কোন কার্যকালাপ আছে বলে বলেননি এবং এমন কোন বস্তু আছে বলেও বলেননি যদ্বারা তাদের সাথে বের হওয়া বা দাওয়াতী কাজে অংশগ্রহন করতে বাধা সৃষ্টি হয়, অথচ এ সকল ভাইয়েরা জামাতের সহিত ভারত-পাকিস্তানের অনেক সফর করেছেন।
অনেক ব্যাক্তি আমরা দেখেছি যারা তাবলীগ জামাতের সহিত বের হয়েছে এবং সঙ্গ লাভ করেছে, তারা প্রভাবিত হয়েছে এবং তাদের ধর্মীয় ও চারিত্রিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে আর আখেরাতের প্রতি তাদের অনুরাগ আরো বেড়ে গেছে। তাই আমি তাদের সাথে বের হওয়া এবং দাওয়াতের কাজে তাদের সাথে অংশগ্রহন করাকে কোন প্রতিবন্ধকতা মনে করি না। বরং জ্ঞানী, প্রজ্ঞাবান ও উত্তম আকীদা সম্পন্ন ব্যাক্তিদের জন্য জামাতে শরিক হওয়া উত্তম। যেন তারা তাবলীগি ভাইদের মধ্যে ভূল থাকলে তা সংশোধন করে দিতে পারে। কারণ পথভ্রষ্ট ও পাপাচারে লিপ্ত ব্যক্তিবর্গের উপর তাবলীগ জামাতের ছোহবতের গভির প্রভাব হয়ে থাকে।
(لإداراتالبحوثالعلميةوالإفتاءوالدعوةوالإرشاد – নং ১১৫৫/খ, তারিখঃ ৫/৯/১৩৯৯ হিজরী )। https://www.youtube.com/watch?v=Ju1q3OsGVQ0
(২) ডক্টর মুহাম্মদ তকীউদ্দীন আল হেলালী-এর নিকট লিখিত পত্রে শায়খ বিন বাজ রাহঃ বলেন –
তাবলীগে বের হওয়াটা নিন্দনীয় সফরের অন্তর্ভূক্ত নয়। কারণ তারা আল্লাহর দ্বীনের প্রতি আহবানের জন্য শহরে শহরে ও গ্রামগঞ্জে ঘুরে বেড়ায়। আর ছোট বড় সকল জনসাধারণের সাথে সাক্ষাৎ করে থাকে। (لإداراتالبحوثالعلميةوالإفتاءوالدعوةوالإرشاد – নং ৮৮৯/খ, তারিখ ১০/১০/১৪০৩ হিজরী )। https://www.youtube.com/watch?v=pCrN83h5iG0
(৩) শায়খ আবদুল আজীজ ইবনে ইউসূফ বাহযাদ সাহেবের নিকট লিখিত পত্রে শায়খ বিন বাজ রাহঃ বলেন –
এই শুভ লগ্নে আমি আপনাকে আপনার পিতা ও ভাই মাহমূদকে সময় সুযোগ মতে নিয়মিত জামাতের সহিত দাওয়াত ইলাল্লাহের কাজে বের হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। যারা আপনাদের সাথে বের হয় তাদেরকে সহীহ আকীদার দিকে আহবান করবেন এবং অন্যান্য দায়ীদেরকেও তা বলবেন।ছাত্রদেরকে আপনাদের সাথে বের হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করবেন এবং কর্ম তৎপরতায় শরীক থাকার জন্য উৎসাহ দিবেন। এটিই হল নবী রাসূলগণ ও তাঁদের অনুসারীদের নীতি। আল্লাহপাক আমাকে ও আপনাদেরকে তাঁদের অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন। (لإداراتالبحوثالعلميةوالإفتاءوالدعوةوالإرشاد – নং ২৫১/খ, তারিখ ২৫/২/১৪০৮ হিজরী)। https://www.youtube.com/watch?v=CryG0uC2riI
(৪) শায়খ ফালেহ বিন নাফে আল্‌ হারবীর নিকট লিখিত পত্রে শায়খ বিন বাজ রাহঃ বলেন –
অনেক খোঁজ-খবর নেওয়ার পর বর্তমানে আমরা এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত যে, আমাদেরকে তাবলীগ জামাতের পার্শ্বে দাড়াতে হবে। সাথে সাথে তাদের মধ্যে কারো কারো কাছে যে ঘাটতি রয়েছে সেজন্য তাকে বুঝাতে হবে। আর ভূল হওয়া মানুষের জন্য স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা হেফাযত রাখেন তাদের কথা ভিন্ন।
(لإداراتالبحوثالعلميةوالإفتاءوالدعوةوالإرشاد – নং ৮৮৮৯/খ, তারিখ ১২/৮/১৪০৬ হিজরী) https://www.youtube.com/watch?v=_tUQj97X6v0
(৫) উস্তাদ আবদুস সালাম ইবনে মুহাম্মদ আমীন সুলাইমানীর নিকট লিখিত পত্রে শায়খ বিন বাজ রাহঃ বলেন –
তাদের মধ্যে নম্রতা , হক্ব গ্রহণ করার আবেগ, আল্লাহর প্রতি দাওয়াত দানের ধৈর্য্যশীলতা ও দ্বীনের রাস্তায় মেহনত ও কষ্ট স্বীকার করা ইত্যাদি গুন পাওয়া যায়। আল্লাহ পাক এদের দ্বারা অনেক পথ হারা ব্যাক্তিকে পথের দিশা দিয়েছেন আর কত কাফেরকে হেদায়েত দান করেছেন। আমি সদাসর্বদা জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাবান ভাইদের দাওয়াতের কাজে তাদের সহযোগিতা করার পরামর্শ দিয়ে থাকি। (لإداراتالبحوثالعلميةوالإفتاءوالدعوةوالإرشاد – নং ৩২৫/খ তারিখ- ২০/৩ /১৪০৬ হিজরী) https://www.youtube.com/watch?v=zvWQyOzBg8c
__________________________________________
শায়খ মুহাম্মদ ইবনে সালেহ আলউসাইমিন রাহঃ এর অভিমত –
“””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””
শায়খ বলেন –
আমার মতে, এই জামাতে অনেক উত্তম আমল রয়েছে। এই দাওয়াতের প্রভাবও খুবই সুদূরপ্রসারী। এর চাইতে দ্রুত ও বেশি প্রভাব সৃষ্টিকারী কোনো জামাত নেই। কত কাফের তাদের দাওয়াত দ্বারা ঈমান এনেছে! কত গুনাহগার এর দ্বারা মুত্তাকী ও মুমিন বান্দায় পরিণত হয়েছে। এতো সকলের সামনে সুস্পষ্ট। আর ছয়টি গুণ যার কথা তাবলিগ জামাতের ভাইয়েরা বলে থাকে। নিঃসন্দেহে তা সুন্দর ও উত্তম গুণাবলী। তবে এই জামাতে ইলমের চর্চা আরো বাড়ানো উচিত বলে আমি মনে করি।
(আছসহওয়াতুল ইসলামিয়া এর জামাআতুত তাবলিগ এর বাবে)
এক ব্যাক্তি তাবলীগ জামাত সম্পর্কে শায়খকে জিজ্ঞাসা করলে এর জবাবে শায়খ বলেন –
আমি মনে করি এই জামআতের মধ্যে কিছু ভালাই রয়েছে। তারা ইসলামের দিকে আহবান করে এবং মানুষের উপর তাদের সুস্পষ্ট যে প্রভাব রয়েছে, অন্য কোন দায়ীর মধ্যে তা নেই। অনেক কাফের তাদের হাতে ইসলাম গ্রহন করেছে আর অসংখ্য গোনাহগার তাদের মাধ্যমে আল্লাহর আশ্রয় লাভ করেছে। অধিকন্তু তাদের মধ্যে নম্রতা ও পরার্থপরতার যে মনোভাব রয়েছে, তা অনেকের মধ্যেই পাওয়া যায় না।
……… যদি তুমি ইলম অন্বেষণ করতে সক্ষম না হও, তাহলে পরিশুদ্ধ করার জন্য তাদের সাথে বের হতে পারো। এটার মধ্যেও কোন ভুল নাই। তাদের মধ্যে এমন লোক আছে, যারা আল্লহর সাহায্য নিয়ে চলে।
(সংক্ষিপ্ত- Al-Baab al-Maftooh, no. 10, P. 304 )
অন্য এক ব্যাক্তি তাবলিগ জামাতে বের হওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে শায়খ বলেন ‘এটা সুন্নত’। এবং এর পদ্ধতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে এর জবাবে শায়খ অনেক কথা বলেন। শায়খ কি বলে শুনুন – http://www.youtube.com/watch?v=a9QOHdTgzcQ&feature=related
____________________________________
শায়খ মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহীম আলে শেখ এর অভিমত –
“”””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””
শায়খ তাবলীগ জামাতকে সহযোগিতা করার লক্ষে আল্‌আহ্‌সা এবং পূর্ব এলাকার আলেম-ওলামাদের প্রতি একটি পত্র লিখেন। এ পত্রে যা ছিলো –
এদের মিশন হলো, মসজিদে মসজিদে গিয়ে জনসাধারণকে তাওহীদ, সুষ্ঠু আকিদা বিশ্বাস এবং কিতাব – সুন্নাহ মতে আমল করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা এবং কবর পূজা , মৃতদের কাছ থেকে চাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন বিদআত কুসংস্কার থেকে বেঁচে থাকার প্রতি আহবান করা এবং ওয়াজ-নছীহত করা।
আমি তাঁদের সহযোগিতার্থে এ পত্রটি লেখলাম যেন দাওয়াতের কাজে তাদের জন্য কোন বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়।
(পত্রটি ইদারাতুল বুহুসিল ইলমিয়্যা , মাকতাব শায়খ মুহাম্মদ ইবরাহীম আলে শায়খ এ সংরক্ষিত আছে।) https://www.youtube.com/watch?v=LO7GIvY2AhI
বিন বায রাহঃ ইবরাহীম আলে শেখ এর পর গ্রান্ড মুফতি ছিলেন। বিন বায রাহঃ আমিন সুলাইমানির কাছে লিখিত পত্রে ইব্রাহীম আলে শেখ সম্পর্কে বলেন –
আমার পূর্বে আমার শায়খ সাবেক সৌদি আরবের প্রধান মুফতি জনাব মুহাম্মদ ইবরাহীম আল্‌ শায়খ তাবলীগ জামাতের প্রশংশা করেছেন এবং তাদের সহযোগীতা করতে বলেছেন।এটি ১৩৭৩ হিজরী সনে পূর্ব এলাকার লোকজনের কাছে লিখিত তার পত্রে উল্লেখিত আছে। তাতে তিনি বলেছেন, “এদের মিশন হল মসজিদে মসজিদে গিয়ে জনসাধারণকে তাওহীদ, শুষ্ঠু আকীদা বিশ্বাস এবং কিতাব সুন্নাহ মতে আমল করার প্রতি উদ্ভুদ্ধ করা এবং কবরপূজা, মৃতদের কাছ থেকে চাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন বেদায়াত-কুসস্কার থেকে বেঁচে থাকার প্রতি আহব্বান করা আর ওয়াজ নসীহত করা।”
(لإداراتالبحوثالعلميةوالإفتاءوالدعوةوالإرشاد – নং ৩২৫/খ তারিখ- ২০/৩ /১৪০৬ হিজরী)
_____________
কিছু মৌলিক কথাঃ
“”””””””””””””””””””
এখানে এ তিনজন আলেমের মত দেওয়ার উদ্দেশ্য এটা নয় যে এরা তাবলীগ জামাতের কাজের প্রসংশা করেছেন বলে এ কাজ সঠিক। বরং দলিলের বিচারে এ কাজ সঠিক। তবে কিছু মানুষ এ সকল আলেমদের নাম দিয়ে এ কাজের বিরোধিতা করায় আমরা তাদের আসল মত সমূহ সামনে নিয়ে আনলাম। এ সকল সম্মানিত আলেমগন যদি তাবলীগ জামাতের বিরোধীতাও করতো তাও তাদের বিরোধীতাকে আমরা দলিলের মানদণ্ডে মেপে দেখতাম।
আর আক্বিদার ব্যাপারে নজদের আলেমদের বাড়াবাড়ির ব্যাপারটা আমরা আগেও উল্লেখ করেছি। ফাযায়েলে হজ্বে বর্ণিত এক ঘটনা নিয়ে আরবের ফতোয়া বোর্ডের বিভ্রান্তিকর ফতোয়ার পর্যালোচনা আমরা ইতিপূর্বে করেছি। যে কেউ এ পর্যালোচনা দেখলে বুঝবেন শুধু শুধু সহীহ আক্বীদার নাম দিয়ে ফাযায়েলে হজ্বের বিরুদ্ধে কথা বলা হয়েছে। ঠিক একই ভাবে তাবলীগের বিরুদ্ধে আরব বা আযমের যে কোন আলেমের ফতোয়া আমরা প্রথমে হুজ্জত দিয়ে যাচাই করবো তারপর ফায়সালা করবো কোনটা সঠিক এবং কোনটা ভুল।

No comments:

Post a Comment