১) মেয়েটি তার ওয়্যারড্রোব খুলল; দুই ডজনের অধিক পোশাক লাল, হলুদ, কমলা, পিঙ্কসহ আরো হরেক রং সেখানে ঝুলছে। দ্রুত এক নজর দেখে নিয়ে সপাটে দরজা লাগিয়ে দিল।
"মা আমার পার্টিতে পরার মত কিছুই নেই, কতদিন ধরে বলছি শপিংয়ে চল, তুমি তো আমার কথা শোনই না, এখন আমি কি পরে যাব?"
২) ছেলেটি চতুর্থ বারের মত ফ্রিজে কিছু খুঁজছিল; পিৎজা, চকলেট, আইসক্রিম, ফল-মুল আর জুস থরে থরে সাজানো রয়েছে। সে হতাশ হয়ে ফ্রিজের দরজা বন্ধ করল আর রান্নাঘর ছাড়তে ছাড়তে বলছিল, " এখানে খাওয়ার মত তেমন কিছুই নাই, চল কোন ক্যাফেতে যাই আর ভাল-মন্দ কিছু খাই।"
৩) সে নিত্যদিনের মত বিষণ্ণতা আর ভয় নিয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠল; যা প্রতিদিন সকালের রোজনামচা। সুইসাইডের প্রবণতা তার মাথায় আবার চড়তে শুরু করেছে। তার বিয়ে হয়েছে এক সুদর্শন পুরুষের সাথে, রয়েছে দুটো ফুটফুটে বাচ্চা, বাড়ি আর গাড়ি; একজন নারী যার স্বপ্ন বুনে তার সবি। আপাতদৃষ্টিতে, জীবন খুবই পারফেক্ট মনে হলেও কিসের যেন শুন্যতা। কেন জানি সে তার স্বপ্নের পুরুষের সন্ধান পায় নি।
৪) সতের বছরের টিনএজার ছেলেটির আই-ফোন, কোর আই-৭ ডেল, ১০০০ ডলার পকেটমানি পাওয়া সত্ত্বেও তার মতে জীবন খুবি ম্যাড়ম্যাড়ে। সে কিছুতেই টেক্সটে মনোযোগ দিতে পারছে না। সে বই নিক্ষেপ করার মত করে বন্ধ করল আর ভাবছে, "আমার বন্ধুর জাগুয়ার (গাড়ির ব্রান্ড) থাকতে পারলে, আমার কেন থাকবে না?"
এই দৃশ্যপটগুলো কি পরিচিত ঠেকছে?
অকৃতজ্ঞতাবোধের স্বভাব। আমাদের বেড়ে উঠার প্রক্রিয়ায় উথপ্রোতভাবে যেন জড়িয়ে আছে অকৃতজ্ঞতা আর আল্লাহ্র অসংখ্য নিয়ামতের প্রতি অন্ধত্ব! আমরা আমাদের সর্বশক্তি ব্যয় করি আমাদের জীবনে কি নেই তারই সালতামামিতে। এটা খুবই বিদ্রূপাত্মক, এই হাপিত্যেশ আমাদের কেবলি কষ্ট বাড়ায়।
এই সকল নেতিবাচক চিন্তা আমাদের হতাশার কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত করে। তাই আমাদের উচিত আমাদের চিন্তা-চেতনাকে সতর্কতা আর সজ্ঞানের সহিত দিকনির্দেশনা দেয়া।
ইতিবাচক চিন্তাকে এর সমাধান হিসেবে আধুনিক মনস্তত্ত্ববিদরা সাম্প্রতিককালে প্রাকৃতিক নিয়ম হিসেবে উদ্ভাবন করতে সক্ষম হলেও কুরআন এই সমস্যার স্বরূপ আর সমাধান দিয়েছে ১৪০০ বছর আগেই:
"এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কেয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব।" [সুরা ত্ব-হাঃ ১২৪]
"যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর।" [সুরা ইব্রাহীম: ০৭]
No comments:
Post a Comment