বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র
নানানভাবে নতুন জিনিস শিখছি দিবারাত্র”
নানানভাবে নতুন জিনিস শিখছি দিবারাত্র”
কবিতার
এই পংক্তির মতোই শিক্ষা এক বিশাল ও বিস্তীর্ণ পরিসরে মানবজীবনে স্থান
নিয়ে আছে। তাইতো সারাজীবন জ্ঞানচর্চা করেও শেষজীবনে মণিষীর মনে উপলব্ধি, “
জ্ঞান সাগরে স্নান করা তো হলো না, এখনো এর বালুকা বেলায় নুড়ি কুড়াচ্ছি
মাত্র। তাই এই শিক্ষাকে দার্শনিকরা নানাভাবে দেখার চেষ্টা করেছেন।
প্রখ্যাত মনিষী জন মিল্টনএর ভাষায়, "Education is the harmonies development of mind, body and soul."
দার্শনিক
সক্রেটিস শিক্ষার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘নিজেকে জানার নামই শিক্ষা’।
তার মতে, শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো মিথ্যার বিনাশ আর সত্যের আবিষ্কার।
রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর ‘মানবধর্ম’ নামক গ্রন্থে বলেছেন, ‘মানুষের অভ্যন্তরীণ সত্তার
পরিচর্যা করে খাঁটি মানুষ বানানোর প্রচেষ্টাই হচ্ছে শিক্ষা।’
শিক্ষাদান
প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির অন্তর্নিহিত গুণাবলীর পূর্ণ বিকাশের জন্য উৎসাহ
দেয়া হয় এবং সমাজের একজন উৎপাদনশীল সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠালাভের জন্য যে
সকল দক্ষতা প্রয়োজন সেগুলো অর্জনে সহায়তা করা হয়। সাধারণ অর্থে জ্ঞান বা
দক্ষতা অর্জনই শিক্ষা। ব্যাপক অর্থে পদ্ধতিগতভাবে জ্ঞানলাভের
প্রক্রিয়াকেই শিক্ষা বলে। তবে শিক্ষা হল সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনের
অব্যাহত অনুশীলন। বাংলা শিক্ষা শব্দটি এসেছে 'শাস' ধাতু থেকে। যার অর্থ
শাসন করা বা উপদেশ দান করা। শিক্ষার ইংরেজি প্রতিশব্দ education এসেছে
ল্যাটিন শব্দ educare বা educatum থেকে। যার অর্থ to lead out অর্থাৎ
ভেতরের সম্ভাবনাকে বাইরে বের করে নিয়ে আসা বা বিকশিত করা। সক্রেটিসের
ভাষায় 'শিক্ষা হল মিথ্যার অপনোদন ও সত্যের বিকাশ।' 'সুস্থ দেহে সুস্থ মন
তৈরি করাই হল শিক্ষা'- এরিস্টটল। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় 'শিক্ষা হল তাই যা
আমাদের কেবল তথ্য পরিবেশনই করে না বিশ্ব সত্তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের
জীবনকে গড়ে তোলে'।
No comments:
Post a Comment