{বর্তমানে কিছু ভাই বুখারী শরীফ
ও মুসলিম শরীফের রাবী সম্মানিত সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)
সম্পর্কে মুসলমান ভাইদের মনে সন্দেহ ঢুকানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। মূলত
সহীহ হাদীস জিকির তুলে তারা সহীহ হাদীসের এবং বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফের
একজন রাবী, সাহাবীর নামের শেষে তারা রা. বলতেও রাজি নয় এবং তাকে অমুসলিম
প্রমানের জন্য ধূর্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে (যেমন তারা প্রচার করে তিনি সুরা
ফালাক ও সুরা নাসকে কুরআনের অংশ মনে করতেন না) }
বুখারী শরীফের এসকল অনুবাদ পড়ে নিজের ঈমান ও আমল বরবাদ করবেন না !
এদের ব্যাপারে আর কি বলব ?! আপনারই বুঝে নিন . . .
সকল প্রশংসা আল্লাহর, সালাম এবং দুরুদ তার হাবীব মুহাম্মদ মুস্তফা (স:)-এর প্রতি যিনি দ্বীন নিয়ে চলার পথ দেখিয়েছেন এবং সাহাবীগন সেই দ্বীনকে পর্ণ ভাবে অনুষরন করে গেছেন।।। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) (তাঁর উম্মতকে লক্ষ্য করে) বলেছেন, তোমরা আমার সাহাবীগণকে গালমন্দ করো না। তোমাদের কেউ যদি ওহোদ পাহাড় সমান স্বর্ণ আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয় কর, তবে তাদের একমুদ বা অর্ধমুদ-এর সমপরিমাণ সাওয়াব হবে না। (সহীহ বুখারী ৩৪০৮ ই:ফা:, এছাড়াও আছে, সহীহ মুসলিম, সুনান আবু দাউদ, সুনান তিরমিযী, মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে ইবনে আবি শাইবাহ)
উপরের তথাকথিত আহলে হাদীস বা লামাযহাবীদের প্রপাগান্ডার মূল জবাব হল, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউস রা. সুরা ফালাক্ব ও সূরা নাস কুরআনের অংশ কিনা এ নিয়ে প্রথমে সামান্য সন্দেহে ছিলেন। কেননা জেনৈক ইহুদী রাসূল স. কে জাদু করার পর উক্ত জাদু থেকে মুক্তি ও আরোগ্যের জন্য এই দুটি সুরা নাজিল করা হয়। তাই ইবনে মাসউদ রা. প্রথম দিকে এই দুটি সুরাকে শুধু ঝাড়ফুকের দোয়া মনে করতেন।
পরবর্তীতে উক্ত সন্দেহ দূর করার জন্য তিনি এ ব্যাপারে বিভিন্ন সাহাবায়ে কেরামের সাথে আলোচনা-পর্যালোচনা করার পর নিশ্চিতভাবে এই সিদ্ধান্তে উপনিত হন যে, নিঃসন্দেহে সুরা ফালাক ও সুরা নাস কুরআনের অন্তর্ভূক্ত। অতঃপর পূবের মত থেকে ফিরে আসেন।
(মহল্লা ১খন্ড, পৃ- ১৩, ত্ববকাত ২খন্ড পৃ- ২০৭, তাফসীরে ইতকান ১ম খন্ড পৃষ্ঠা- ৭৯, তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪র্থ খন্ড পৃষ্ঠা- ৫৭১, তাফসীরে রুহুল মায়ানী ৩০মত খন্ড পৃষ্ঠা- ২৭৯)
কিন্তু এই কাজ্জাবগুলো শুধুমাত্র রফে ইয়াদাইনের রহিত হওয়ার হাদীস কাটার জন্য একজন সম্মানীত সাহাবীর ব্যাপারে পূবের মত প্রচারের মাধ্যমে পরবর্তী মত গোপনের মাধ্যমে তাকে অমুসলিম বানানোর (কুরআনের কোন অংশ কেহ যদি অস্বীকার করে তবে কি মুসলিম থাকে ?) ঘৃণ্য অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে !!!
আমার এই লেখায় আমি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)এর ব্যাপারে কটুক্তির জবাব দেয়া ওয়াজিব মনে করেছি।। ইদানিং কিছু গায়রে মুকাল্লিদের দেখা যায় আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)- এর বর্ননাকৃত হাদিস নিয়ে কটুক্তি করতে, তারা বলে থাকেন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)-এর ভুলে যাওয়ার অভ্যাস ছিলো, তাই তার হাদিস গ্রহণযোগ্য নয় সেটা যদি সহীহ হাদিসও হয়। আমার প্রশ্ন যেটা সহীহ হাদিস সেই হাদিস অগ্রহণযোগ্য এই ফতোয়া কে কে দিয়েছেন?? তার হাদিস যদি গ্রহণ যোগ্য না হয় তবে আপনারা কেন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) হাদিস গ্রহণ করেন এবং সে অনুযায়ী আমল করেন?? আমি এখানে সহীহ হাদিস দ্বারা আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)এর হাদিস গ্রহণ যোগ্য তার প্রমাণ করবো ইন-শা-আল্লাহ।।। আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ শ্রেষ্ঠ হল আমার যমানার লোক । তারপর উত্তম হল এদের পরবর্তী যমানার লোক তারপর উত্তম হল এদের পরবর্তী যমানার লোক, তারপর এমন সব লোকের আবির্ভাব হবে, যাদের সাক্ষ্য তাদের কসমের পূর্বেই হবে, আর তাদের কসম তাদের সাক্ষ্যের পূর্বেই হবে । (বুখারী:৫৯৮৬ ই:ফা:)
গায়রে মুকাল্লিদের অভিযোগ যে হাদিসের ব্যাপারে সেটি হয় রাফয়েল ইয়াদাইন না করার হাদিস বর্ননার ক্ষেত্রে।আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) বলেন, আমি কি তোমাদেরকে রাসূল (স:)-এর নিয়মে সালাত আদায় করে দেখাবো না? তিনি (আবদুল্লাহ) সালাত আদায় করলেন, কিন্তু প্রথমবার (তাকবীরে তাহরীমার সময়)ছাড়া আর কোথাও রফউল ইয়াদাইন করেননি। তিরমিজী:২৫৭-সহীহ
আলবানী (রহ) এই হাদিসটিকে তার সহীহুত তিরমিজি শরীফে সহীহ বলেছেন। এবং আরো বলেছেন, একাধিক সাহাবা ও তাবিঈন এ হাদিসের অনুকুলে মত দিয়েছেন। সুফিয়ান সওরী ও কুফাবাসীগন এই মত গ্রহণ করেছেন।
গায়রে মুকাল্লুদগনের আস্থাভাজন নাসির উদ্দিন আলবানী (রহ) যিনি নিজেকে সালাফী বলাকে ফরজ মনে করেছেন তিনি এই হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। কারণ তিনি সনদে কোন ত্রুটি পাননি। কিন্তু তার অনুষারীরা তার বিপরীতে মত দেন কারণ তারা তাদের মতকে অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়ার জন্য এইরকম চরম কটুক্তির আশ্রয় নিচ্ছে।।।
তাদের কাছে আমার একটি প্রশ্ন: যে ব্যক্তি কোন বিষয় জানে তার পর যদি অন্য কাউকে জানানোর উদ্দেশ্য প্রশ্ন করে তবে কি তিনি ভুল করতে পারেন??? ধরুন আপনার ক্লাসের টিচার কোন একটি বিষয় আপনাকে শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্য আপনাকে বলল আমি কি তোমাকে এই বিষয়টি দেখিয়ে দিব না? তখন সেই শিক্ষক কি তার নিজের করা প্রশ্নের উত্তর দিতে ভুল করবেন??? যদি না করেন তবে এই হাদিসের মতনে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) ভুল করেন নি।।।
রাফয়েল ইয়াদাইন না করা রাসূল (স:)-এর জীবনের শেষ আমল সেটি নিচে ইন শা আল্লাহ প্রমাণ করবো। তার আগে যেনে নেই রাসূল (স:)-এর জীবনের শেষ আমল গ্রহণযোগ্য এটি কোন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত বুখারী শরীফের কিতাবুল আযানের ৬৫৫ নং হাদিস: আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে,.....আর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর আমলের মধ্যে সর্বশেষ আমলই গ্রহণীয়। একই রকম হাদিস বুখারী শরীফের কিতাবুল জীহাদের ২৭৪৯ সং হাদিস: ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত.... রাসূলুল্লাহ (রা)- এর সর্বশেষ কার্যই গ্রহণযোগ্য। আরো দেখতে পারেন বুখারী শরীফের কিতাবুল মাগাযী এর ৩৯৪৯ নং হাদিস: ইব্ন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত যে, (উম্মাতের জীবনযাত্রায়) ফাতওয়া হিসেবে গ্রহণ করার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাজকর্মের শেষোক্ত আমলটিকেই চূড়ান্ত দলীল হিসাবে গণ্য করা হয়। (কেননা শেষোক্ত আমল এর পূর্ববর্তী আমলকে রহিত করে দেয়)।
উপরক্ত হাদিসগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, রাসূল(স:) এর শেষ জীবনের আমল গ্রহণযোগ্য যদি একটি আমলের উপর অনেক হাদিসও হয়ে থাকে সেটি পরিত্যাজ্য। আর সে ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে শেষ জীবনের আমল যদিও একটিও সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। আর রাফয়েল ইয়াদাইন না করা নবী (স:)এর শেষ জীবনের আমল। আরো অনেক হাদিস দ্বরা রাফেল ইয়াদাইন শেষ জীবনের আমল তা প্রমাণ করা যায় কিন্তু আমরা এখানে একটি হাদিস নিয়ে আলোচনা করবো, কেননা সেই হাদিসটি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)এর থেকে বর্নিত। তাই এই হাদিসটি নিয়ে নিম্নে আলোচনা প্রদান করাহবে। প্রথমে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)কুফায় ছিলেন তার প্রমাণ:
১, আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ)নবী কারীম(স:) এর ইন্তিকালের পরে কুফায় গিয়েছিলেন।
তার প্রমাণ বুখারী শরীফের নিম্নক্ত হাদিস।
ক, আলকামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সিরিয়ায় গমন করলাম (সেখানে পৌছে) দু’রাকাত (নফল) সালাত আদায় করে দু’আ করলাম, হে আল্লাহ্, আপনি আমাকে একজন নেক্কার সাথী মিলিয়ে দিন। তারপর আমি একটি জামাআতের নিকট এসে তাদের নিকট বসলাম। তখন একজন বৃদ্ধ লোক এসে আমার পাশেই বসলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইনি কে? তারা উত্তরে বললেন, ইনি আবূ দারদা (রাঃ)। আমি তখন তাঁকে বললাম, একজন নেক্কার সাথীর জন্য আমি আল্লাহ্র নিকট দু’আ করেছিলাম। আল্লাহ্ আপনাকে মিলিয়ে দিয়েছেন। তিনি বললেন, তুমি কোথাকার বাসিন্দা? আমি বললাম, আমি কুফার বাসিন্দা। তিনি বললেন, (নাবী (সাঃ) - এর জুতা, বালিশ এবং অজুর পাত্র বহন কারী সর্বক্ষণের সহচর (আবদুল্লাহ (রাঃ)) কি তোমাদের ওখানে নেই ? তোমাদের মাঝে কি ঐ ব্যক্তি নেই যাকে আল্লাহ্ শয়তান থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন ? (অর্থাৎ আম্মার ইবন ইয়াসির (রাঃ) তোমাদের মধ্যে কি নাবী (সাঃ) -এর গোপন তথ্য অভিজ্ঞ লোকটি নেই? যিনি ব্যতীত অন্য কেউ এই রহস্য জানেন না (অর্থাৎ হুযায়ফা (রাঃ) তারপর তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) সূরা কি ভাবে পাঠ করতেন? তখন আমি তাঁকে সূরাটি পড়ে শোনালামঃ... (বুখারী ৩৪৭০,৩৪৮৯. ৫৮৪৩ ই:ফা:)
খ, আবু ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আলী (রাঃ) যখন আম্মার (রাঃ)-কে যূদ্ধে অংশ গ্রহনের আহবান জানাতে কুফাবাসীদের নিকট প্রেরণ করলেন, তখন আবু মুসা ও আবু মাসউদ (রাঃ) তার নিকট উপস্হিত হয়ে বললেনঃ তোমার ইসলাম গ্রহণের পর থেকে আমাদের জানামতে বর্তমান বিষয়ে (যুদ্ধের জন্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করার বিষয়ে) দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করার চেয়ে অপছন্দনীয় কোন কাজ করতে আমরা তোমাকে দেখিনি। তখন আম্মার (রাঃ) বললেনঃ যখন থেকে আপনারা ইসলাম গ্রহণ করেছেন আমি আপনাদের কোন কাজ দেখিনি যা আমার কাছে অপছন্দনীয় বিবেচিত হয়েছে বর্তমানের এ কাজে দেরী করা ব্যতীত। তখন আবু মাসউদ (রাঃ) তাদের দু-জনকেই একজোড়া করে পোশাক পরিধান করিয়ে দিলেন। এরপর সকলেই (কুফা) মসজিদের দিকে রওনা হলেন।(বুখারী:৬৬২১ ই:ফা:)
২, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদকে (রা)-এর কুফায় তার অবস্থান
তৎকালিন সময় কুফা শহরে বসতি স্হাপনকারী মুসলমানদের মধ্যে দীনি এলেম প্রচার এবং ফতোয়া প্রদান করার গুরু দায়িত্বে বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদকে (রা) সরকারিভাবে নিয়োগ দান করা হয়। হযরত ওমর (রা) কূফবাসীগণের প্রতি প্রেরীত এক ফরমানে উল্লেখ করেছিলেন যে আবদুল্লাহ ইবনে মসউদের ন্যায় প্রাজ্ঞ ব্যক্তির এখানেই (রাজধানীর মদিনায়) বিশেয় প্রয়োজন ছিল। তা সত্বেও তোমাদের প্রয়োজনের প্রতি লক্ষ্য করে তাঁকে কূফায় পাঠানো হলো। বলাবাহুল্য যে, খলীফার এই ফরমানের দ্বারাই বোঝা যায় যে, আবদুল।লাহ ইবনে মসউদ রা. কত প্রাজ্ঞ ও উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন একজন সাহাবী ছিলেন। ইবনে মাসউদ রা. তৃতীয় খলীফা হযরত ওসমানের রা. খেলাফত আমলের শেষ সময় পর্যন্ত জনগণের মধ্যে কুরআন, হাদিস এবং ফেকাহর তালীম দিতে থাকেন। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতেই কূফায় অন্যুন চার হাজার বিশিষ্ট মুহাদ্দেসম মুফাছছেরও ফকীহর সৃষ্টি হয়েছিল। হযরত আলী রা. যখন রাজধানী যখন রাজধানী স্হানান্তর করে কূফায় আসেন, তখন এখানকার জ্ঞান চর্চার পরিবেশ তাঁকে মুগ্ধ করেছিল। কাঁর মন্তব্য ছিল- আল্লাহ পাক ইবনে মাসউদের রা. কল্যাণ করুন। তিনি এই শহরকে এলেমের নগরীতে পরিণত করে দিয়েছেন।
৩. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) নবী(স:) এর খিদমতে অনেক বছর ছিলেন,
ক, আসওয়াদ ইবন ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবূ মূসা আশআরী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে আমি এবং আমার ভাই ইয়ামান থেকে মদীনায় আগমন করি এবং বেশ কিছুদিন মদীনায় অবস্থান করি। তখন আমরা মনে করতাম যে, আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর পরিবারেরই একজন সদস্য। কেননা আমরা তাঁকে এবং তাঁর মাকে অহরহ নাবী (সাঃ) এর ঘরে যাতায়াত করতে দেখতাম। (বুখারী:৩৪৯১ ই:ফা:)
খ, ....(নাবী (সাঃ) - এর জুতা, বালিশ এবং অজুর পাত্র বহন কারী সর্বক্ষণের সহচর (আবদুল্লাহ (রাঃ)) কি তোমাদের ওখানে নেই ? (বুখারী ৩৪৭০,৩৪৮৯. ৫৮৪৩ ই:ফা:)
৪. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) কুরআনের একজন শিক্ষক ছিলেন,
সুলায়মান ইবন হারব (রহঃ).......মাসরূক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবন আমর (রাঃ)-এর মজলিসে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ)-এর আলোচনা হলে তিনি বললেন, আমি এই ব্যক্তিকে ঐদিন থেকে অত্যন্ত ভালবাসি যেদিন রাসূল (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি, তোমরা চার ব্যক্তি থেকে কুরআন শিক্ষা কর, আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ সর্বপ্রথম তাঁর নাম উল্লেখ করলেন, আবূ হুযায়ফা (রাঃ)-এর আযাদকৃত গোলাম সালিম, উবাই ইবন কা’ব (রাঃ) ও মু‘আয ইবন জাবাল (রাঃ) থেকে। শেষোক্ত দু’জনের মধ্যে কার নাম আগে উল্লেখ করছিলেন শুধু এ কথাটুকু আমার স্মরণ নেই। (বুখারী:৩৪৮৭, ৩৪৮৮, ৩৫৩৪, ৩৫৩৬ ই:ফা:)
৫. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) কুরআনের একজন বদরী সাহাবী ছিলেন,
ক, আবদুল্লাহ ইব্ন মাসউদ(রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) কা’বার দিকে মুখ করে কুরাইশ গোত্রীয় কপিতয় লোক তথা—শায়বা ইব্ন রাবী’আ, উতবা ইব্ন রাবী’আ, ওয়ালিদ ইব্ন উতবা এবং আবূ জেহেল ইব্ন হিশামের বিরুদ্ধে দু’আ করেন। (আবদুল্লাহ ইব্ন মাসউদ(রাঃ)বলেন) আমি আল্লাহ্র নামে সাক্ষ্য দিচ্ছি, অবশ্যই আমি এ সমস্ত লোকদেরকে (বদরের রণাঙ্গনে) নিহত হয়ে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখেছি। রৌদ্রের প্রচন্ডতা দেহগুলোকে বিকৃত করে দিয়েছিল। বস্তুতঃ সে দিনটি ছিল প্রচন্ড গরম।(বুখারী: ৩৬৭৪, ৩৫৭৫ ই:ফা:)
৬. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ)ফতোয়া দানকারী সাহাবী ছিলেন,
ক, আমর ইবন আব্বাস (রহঃ)......হুযায়ল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) বলেছেনঃ, আমি এতে ঐ ফয়সালাই করব যা নাবী (সাঃ) করেছিলেন। অথবা তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ (তা হচ্ছে) কন্যার জন্য সম্পত্তির অর্ধেক আর পুত্র পক্ষের নাতনীদের জন্য ষষ্ঠাংশ। এরপর যা অবশিষ্ট থাকবে তা ভগ্নির জন্য। (বুখারী:৬২৮৬ ই:ফা:)
৭. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) জ্ঞানী সাহাবী ছিলেন,
ক, আদাম (রহঃ)......হুযায়ল ইবন ওরাহবীল (রাঃ) থেকে বর্ণিত ।তিনি বলেনঃ একদা আবু মুসা (রাঃ)-কে কন্যা, পূত্র পক্ষের নাতনী এবং ভগ্নির উত্তরাধিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তখন তিনি বললেনঃ কন্যার জন্য অর্ধেক আর ভগ্নির জন্য অর্ধেক। (তিনি আবু মুসা (রাঃ)বললেন) তোমরা ইবন মাসউদ (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে দেখ, তিনিও হয়ত আমার মত উত্তর দিবেন। সুতরাং ইবন মাসউদ (রাঃ)-কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল এবং আবু মুসা (রাঃ) যা বলেছেনঃ সে সম্পর্কেও তাকে অবহিত করা হল। তিনি বললেনঃ আমি তো গোমরা হয়ে যাব, হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারব না। আমি এ ব্যাপারে তোমাদের মাঝে ঐ ফায়সালাই করব, নাবী (সাঃ) যে ফায়সালা প্রদান করেছিলেন। কন্যা পাবে অর্ধাংশ আর নাতনী পাবে ষষ্ঠাশ। এভাবে দুতৃতীয়াংশ পূরু হবে। অবশিষ্ট এক-তৃতীয়াংশ থাকবে ভন্নির জন্য। এরপর আমরা আবু মুসা (রাঃ)-এর কাছে আসলাম এবং ইবন মাসউদ (রাঃ) যা বললেন, সে সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করলাম। তখন তিনি (আবু মুসা (রাঃ)) বললেনঃ যতদির এ অভিজ্ঞ আলিম (জ্ঞানতাপস) তোমাদের মাঝে বিদ্যমান থাকবে ততদিন আমার কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করো না। (বুখারী:৬২৮০ ই:ফা:)
৮. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) এর গুরুত্ব
ক, হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রা:) বলেন, নবী কারীম (স:) বলেছেন, প্রত্যেক নবীকে সাতজন করে বিশেষ ব্যক্তি দান করা হয়েছে এবং আমাকে দান করা হয়েছে চৌদ্দজন। আমরা বললাম, তারা কার? তিনি বলেন, আমি (আলী), আমার দুই পুত্র (হাসান ও হুসাইন), জাফর,হামযা, আবূ বকর, ওমর ইবনে উমাইর, বিলাল, সালমান, আম্মার, আল-মিকদাদ, হোযাইফা ও আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)। (তিরমিজি ৩৭২৭ ই:ফা:)
খ, হযরত হুযাইফা (রা:) বর্ণনা করিয়াছেন যে, রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলিয়াছেন, জানিনা আমি তোমাদের মাঝে কতদিন জীবিত থাকিব। অতঃপর আবু বকর ও উ’মার রদিয়াল্লহু আ’নহুমা এর প্রতি ইঙ্গিত করিয়া বলিলেন, তোমরা আমার পর এই দুইজনের অনুসরণ করিও; আর আ’ম্মারের (রদিয়াল্লহু আ’নহু) চরিত্র অবলম্বন করিও ও ইবনে মাসঊ’দ (রা:) যাহা কিছু বর্ণনা করেন উহাকে সত্য জানিও। (তিরমিযী)
গ, হযরত আলী (রা:) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসূল (স:) বলেছেন, আমি যদি তাদের কাউকে পরামর্শ ব্যতীত আমীর নিয়োগ করতাম, তবে উম্মে আবদকে (আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদকে) আমীর নিয়োগ করতাম। (তিরমিজি: ৩৭৪৬, ৩৭৪৭ ই:ফা:)
এর পরও যারা আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ)-এর হাদিস দলিল হিসাবে গ্রহণ করেন না তাদেরকে প্রশ্ন করি আপনারা কি নিম্ন বর্নিত হাদিস গুলোকেও অগ্রহনযোগ্য বলবেন???
১. আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) সালাত আদায় করলেন। রাবী ইবরাহীম (রহঃ) বলেনঃ আমার জানানেই, তিনি বেশী করেছেন বা কম করেছেন। সালাত ফিরানোর পর তাঁকে বলা হলো, ইয়া রাসূল (সাঃ) ! সালাতের মধ্যে নতুন কিছু হয়েছে কি? তিনি বললেনঃ তা কী? তাঁরা বললেনঃ আপনি তো এরুপ এরপ সালাত আদায় করলেন। তিনি তখন তাঁর দু’পা ঘুয়িয়ে কিবলামুখী হলেন। আর দু’টি সিজদা আদায় করলেন। এরপর সালাম ফিরালেন। পরে তিনি আমাদের দিকে ফিরে বললেনঃ যদি সালাত সম্পর্কে নতুন কিছু হতো, তবে অবশ্যই তোমাদের তা জানিয়ে দিতাম। কিন্তু আমি তো তোমাদের মত একজন মানুষ। তোমরা যেমন ভুল করে থাক, আমিও তোমাদের মত ভুলে যায়। আমি কোন সময় ভুলে গেলে তোমরা আমাকে স্মরণ করিয়ে দেবে। তোমাদের কেউ সালাত সম্বন্ধে সন্দেহে পতিত হলে সে যেন নিঃসন্দেহে হওয়ার চেষ্টা করে এবং সে অনুযায়ী সালাত পূর্ণ করে। তারপর সে সালাম ফিরিয়ে সিজদা আদায় করে।(বুখারী : ৩৯২ ই:ফা:)
২. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী (সাঃ) একদা তাদের নিয়ে যোহরের সালাত আদায় করলেন। তিনি সালাতে কিছু অধিক করলেন অথবা কিছু কম করলেন। মানসুর বলেন! এই কম-বেশির ব্যাপারে সন্দেহ ইবরাহীমের না আলকামার তা আমার জানানেই। রাবী বলেন আরয করা হল, ইয়া রাসুলুল্লাহ(সাঃ)! সালাতের মাঝে কি কিছু কমিয়ে দেয়া হয়েছে না আপনি ভুলে গিয়েছেন? তিনি বললেনঃ কি হয়েছে? সাহাবাগণ বললেনঃ আপনি এভাবে এভাবে সালাত আদায় করেছেন। রাবী বলেন- তখন তিনি তাদেরকে নিয়ে দুটি সিজদা করেন। এরপর বললেনঃ এ দুটি সিজদা ঐ ব্যক্তির জন্য যার স্বরণ নেই যে, সালাতে সে কি বেশি কিছু করেছে, না কম করেছে। এমন অবস্থায় সে চিন্তা করবে (প্রবল ধারণার ভিত্তিতে আমল করবে), আর যা বাকি থাকবে তা পুরা করে নেবে! এরপর দু টি সিজদা আদায় করবে। (বুখারী: ৬২১৬ ই:ফা: )
৩. আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (ইসলামের প্রাথমিক যুগে) সালাতে রত থাকা অবস্থায় নাবী (সাঃ) -কে আমরা সালাম করতাম, তিনিও আমাদের সালামের উত্তর দিতেন। যখন আমরা নাজাশীর (হাবশা) কাছ থেকে ফিরে এলাম, তখন সালাতে রত অবস্থায় তাঁকে সালাম করলাম, কিন্তু তিনি সালামের জবাব দিলেন না। আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসূল (সাঃ) আমরা (সালাতের মধ্যে) আপনাকে সালাম করতাম এবং আপনিও সালামের উত্তর দিতেন। কিন্তু আজ আপনি আমাদের সালামের জবাব দিলেন না? তিনি বললেন, সালাতের মধ্যে আল্লাহ্র দিকে নিবিষ্টতা থাকে। রাবী বলেন, আমি ইব্রাহীম নাখয়ীকে জিজ্ঞাসা করলাম, (সালারেত মধ্যে কেউ সালাম করলে) আপনি কি করেন? তিনি বললেন, আমি মনে মনে জবাব দিয়ে দেই।(বুখারী : ৩৫৯৬, ১১৪৩, ১১২৫ ই:ফা:)
৪. আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ). বলেছেনঃ বুদ্ধিমান, বিচক্ষণ ও জ্ঞানী লোকেরা আমার নিকটবর্তী হয়ে দাঁড়াবে। অতপর পর্যায়ক্রমে তাদের কাছাকাছি যোগ্যতাসম্পন্ন লোকেরা দাঁড়াবে। তিনি একথা তিনবার বলেছেন। সাবধান! তোমরা (মসজিদে) বাজারের মত শোরগোল করবে না। (মুসলিম: ৮৫৬ ই:ফা:)
৫. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) হবে বর্নিত। তিনি বলেন, (নামাযরত অবস্থায়) রাসূল(স:) প্রত্যেকবার উঠা, নিচু হওয়া, দাড়ানো ও বসার সময় 'আল্লাহু আকবার' বলতেন। হযরত আবু বকর এবং ওমর (রা:)-ও এরুপ আমল করতেন।-সহীহ (তিরমিজি: ২৪০ ই:ফা:)
৬. আব্দুল্লাহ(রা) থেকে বর্নিত। রাসূল(সা:) তার ডান ও বামদিকে সালাম ফিরাতেন; এমনকি তার দুই গালের শ্রভ্রতা দেখা যেতো। তিনি বলতেন: আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহভ। (ইবনে মাজাহ: ৯১৪, তিরমিজি: ২৭৭ ই:ফা:)
৭. আব্দুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) রা: সূত্রে রাসূল (স:) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন তোমাদের কারো যদি সালাতে সন্দেহের উদ্রেক হয় তা হলে যেন ভেবে দেখে। যা সে সঠিক মনে করে তা পূর্ণ করকে, তারপর দু'টি সিজদা করে নেবে। (নাসায়ী: ১২৪৪ ই:ফা:)
৮. আবদুল্লাহ্ (ইবন মাসউদ) (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) এর সামনে এক ব্যক্তির সম্পর্কে আলোচনা করা হল- সকাল বেল পর্যন্ত সে ঘুমিয়েই কাটিয়েছে, সালাতের জন্য (যথা সময়ে) জাগ্রত হয়নি, তখন (নাবী (সাঃ) ) ইরশাদ করলেনঃ শয়তান তার কানে পেশাব করে দিয়েছে।(বুখারী: ১০৭৮ ই:ফা:)
৯. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর লানত বর্ষিত হোক সে সব নারীদের উপর যারা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে উলকি উরকীর্ন করে এবং যারা উৎকীর্ণ করায়, আর সে সব নারীদের উপর যারা চুল, ভুরু উঠিয়ে ফেলে এবং সে সব নারীদের উপর যারা সৌন্দর্যের জন্যে সামনের দাঁত কেটে সরু করে দাতের মাঝে ফাক সৃষ্টি করে, যা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন এনে দেয়।রাবী বলেনঃ আমি কেন তার উপর লানত করবো না, যাকে নাবী (সাঃ) লানত করেছেন? আর আল্লাহর কিতাবে আছে এই রাসূল (সাঃ)তোমাদের কাছে যে বিধান এনেছেন তা গ্রহণ করো । (বুখারী: ৫৫০৭,৫৫১৪,৫৫২৪ ই:ফা:)
১০. “আবদুল্লাহ্ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেনঃ তোমার দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করাটা একটা বেয়াদবী”। (তিরমিজি ১২ তা:প্র:)
১১. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ্ বলেছেনঃ তোমরা শুকনো গোবর দিয়ে আর হাড় দিয়ে ইস্তিনজা করবে না। কেননা এগুলো তোমাদের ভাই জ্বিনদের খাদ্য। (তিরমিজি ১৮ তা: প্র:, মুসলিম:৮৮৯ ই:ফা:)
১২. আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত । তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) কুকুরের মূল্য, গনকের পারিশ্রমিক এবং বেশ্যার উপার্জন গ্রহন করতে নিষেধ করেছেন । (বুখারী:৪৯৫৫, ৫৩৪৯ ই:ফা:)
১৩. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যক্তি (সাহাবী) নাবী (সাঃ) -কে জিজ্ঞাসা করলেন, কোন আমলটি সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ যথাসময়ে নামায আদায় করা, মাতাপিতার সাথে সৎবহ�
বুখারী শরীফের এসকল অনুবাদ পড়ে নিজের ঈমান ও আমল বরবাদ করবেন না !
এদের ব্যাপারে আর কি বলব ?! আপনারই বুঝে নিন . . .
সকল প্রশংসা আল্লাহর, সালাম এবং দুরুদ তার হাবীব মুহাম্মদ মুস্তফা (স:)-এর প্রতি যিনি দ্বীন নিয়ে চলার পথ দেখিয়েছেন এবং সাহাবীগন সেই দ্বীনকে পর্ণ ভাবে অনুষরন করে গেছেন।।। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) (তাঁর উম্মতকে লক্ষ্য করে) বলেছেন, তোমরা আমার সাহাবীগণকে গালমন্দ করো না। তোমাদের কেউ যদি ওহোদ পাহাড় সমান স্বর্ণ আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয় কর, তবে তাদের একমুদ বা অর্ধমুদ-এর সমপরিমাণ সাওয়াব হবে না। (সহীহ বুখারী ৩৪০৮ ই:ফা:, এছাড়াও আছে, সহীহ মুসলিম, সুনান আবু দাউদ, সুনান তিরমিযী, মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে ইবনে আবি শাইবাহ)
উপরের তথাকথিত আহলে হাদীস বা লামাযহাবীদের প্রপাগান্ডার মূল জবাব হল, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউস রা. সুরা ফালাক্ব ও সূরা নাস কুরআনের অংশ কিনা এ নিয়ে প্রথমে সামান্য সন্দেহে ছিলেন। কেননা জেনৈক ইহুদী রাসূল স. কে জাদু করার পর উক্ত জাদু থেকে মুক্তি ও আরোগ্যের জন্য এই দুটি সুরা নাজিল করা হয়। তাই ইবনে মাসউদ রা. প্রথম দিকে এই দুটি সুরাকে শুধু ঝাড়ফুকের দোয়া মনে করতেন।
পরবর্তীতে উক্ত সন্দেহ দূর করার জন্য তিনি এ ব্যাপারে বিভিন্ন সাহাবায়ে কেরামের সাথে আলোচনা-পর্যালোচনা করার পর নিশ্চিতভাবে এই সিদ্ধান্তে উপনিত হন যে, নিঃসন্দেহে সুরা ফালাক ও সুরা নাস কুরআনের অন্তর্ভূক্ত। অতঃপর পূবের মত থেকে ফিরে আসেন।
(মহল্লা ১খন্ড, পৃ- ১৩, ত্ববকাত ২খন্ড পৃ- ২০৭, তাফসীরে ইতকান ১ম খন্ড পৃষ্ঠা- ৭৯, তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪র্থ খন্ড পৃষ্ঠা- ৫৭১, তাফসীরে রুহুল মায়ানী ৩০মত খন্ড পৃষ্ঠা- ২৭৯)
কিন্তু এই কাজ্জাবগুলো শুধুমাত্র রফে ইয়াদাইনের রহিত হওয়ার হাদীস কাটার জন্য একজন সম্মানীত সাহাবীর ব্যাপারে পূবের মত প্রচারের মাধ্যমে পরবর্তী মত গোপনের মাধ্যমে তাকে অমুসলিম বানানোর (কুরআনের কোন অংশ কেহ যদি অস্বীকার করে তবে কি মুসলিম থাকে ?) ঘৃণ্য অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে !!!
আমার এই লেখায় আমি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)এর ব্যাপারে কটুক্তির জবাব দেয়া ওয়াজিব মনে করেছি।। ইদানিং কিছু গায়রে মুকাল্লিদের দেখা যায় আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)- এর বর্ননাকৃত হাদিস নিয়ে কটুক্তি করতে, তারা বলে থাকেন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)-এর ভুলে যাওয়ার অভ্যাস ছিলো, তাই তার হাদিস গ্রহণযোগ্য নয় সেটা যদি সহীহ হাদিসও হয়। আমার প্রশ্ন যেটা সহীহ হাদিস সেই হাদিস অগ্রহণযোগ্য এই ফতোয়া কে কে দিয়েছেন?? তার হাদিস যদি গ্রহণ যোগ্য না হয় তবে আপনারা কেন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) হাদিস গ্রহণ করেন এবং সে অনুযায়ী আমল করেন?? আমি এখানে সহীহ হাদিস দ্বারা আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)এর হাদিস গ্রহণ যোগ্য তার প্রমাণ করবো ইন-শা-আল্লাহ।।। আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ শ্রেষ্ঠ হল আমার যমানার লোক । তারপর উত্তম হল এদের পরবর্তী যমানার লোক তারপর উত্তম হল এদের পরবর্তী যমানার লোক, তারপর এমন সব লোকের আবির্ভাব হবে, যাদের সাক্ষ্য তাদের কসমের পূর্বেই হবে, আর তাদের কসম তাদের সাক্ষ্যের পূর্বেই হবে । (বুখারী:৫৯৮৬ ই:ফা:)
গায়রে মুকাল্লিদের অভিযোগ যে হাদিসের ব্যাপারে সেটি হয় রাফয়েল ইয়াদাইন না করার হাদিস বর্ননার ক্ষেত্রে।আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) বলেন, আমি কি তোমাদেরকে রাসূল (স:)-এর নিয়মে সালাত আদায় করে দেখাবো না? তিনি (আবদুল্লাহ) সালাত আদায় করলেন, কিন্তু প্রথমবার (তাকবীরে তাহরীমার সময়)ছাড়া আর কোথাও রফউল ইয়াদাইন করেননি। তিরমিজী:২৫৭-সহীহ
আলবানী (রহ) এই হাদিসটিকে তার সহীহুত তিরমিজি শরীফে সহীহ বলেছেন। এবং আরো বলেছেন, একাধিক সাহাবা ও তাবিঈন এ হাদিসের অনুকুলে মত দিয়েছেন। সুফিয়ান সওরী ও কুফাবাসীগন এই মত গ্রহণ করেছেন।
গায়রে মুকাল্লুদগনের আস্থাভাজন নাসির উদ্দিন আলবানী (রহ) যিনি নিজেকে সালাফী বলাকে ফরজ মনে করেছেন তিনি এই হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন। কারণ তিনি সনদে কোন ত্রুটি পাননি। কিন্তু তার অনুষারীরা তার বিপরীতে মত দেন কারণ তারা তাদের মতকে অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়ার জন্য এইরকম চরম কটুক্তির আশ্রয় নিচ্ছে।।।
তাদের কাছে আমার একটি প্রশ্ন: যে ব্যক্তি কোন বিষয় জানে তার পর যদি অন্য কাউকে জানানোর উদ্দেশ্য প্রশ্ন করে তবে কি তিনি ভুল করতে পারেন??? ধরুন আপনার ক্লাসের টিচার কোন একটি বিষয় আপনাকে শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্য আপনাকে বলল আমি কি তোমাকে এই বিষয়টি দেখিয়ে দিব না? তখন সেই শিক্ষক কি তার নিজের করা প্রশ্নের উত্তর দিতে ভুল করবেন??? যদি না করেন তবে এই হাদিসের মতনে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) ভুল করেন নি।।।
রাফয়েল ইয়াদাইন না করা রাসূল (স:)-এর জীবনের শেষ আমল সেটি নিচে ইন শা আল্লাহ প্রমাণ করবো। তার আগে যেনে নেই রাসূল (স:)-এর জীবনের শেষ আমল গ্রহণযোগ্য এটি কোন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত বুখারী শরীফের কিতাবুল আযানের ৬৫৫ নং হাদিস: আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে,.....আর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর আমলের মধ্যে সর্বশেষ আমলই গ্রহণীয়। একই রকম হাদিস বুখারী শরীফের কিতাবুল জীহাদের ২৭৪৯ সং হাদিস: ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত.... রাসূলুল্লাহ (রা)- এর সর্বশেষ কার্যই গ্রহণযোগ্য। আরো দেখতে পারেন বুখারী শরীফের কিতাবুল মাগাযী এর ৩৯৪৯ নং হাদিস: ইব্ন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত যে, (উম্মাতের জীবনযাত্রায়) ফাতওয়া হিসেবে গ্রহণ করার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাজকর্মের শেষোক্ত আমলটিকেই চূড়ান্ত দলীল হিসাবে গণ্য করা হয়। (কেননা শেষোক্ত আমল এর পূর্ববর্তী আমলকে রহিত করে দেয়)।
উপরক্ত হাদিসগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, রাসূল(স:) এর শেষ জীবনের আমল গ্রহণযোগ্য যদি একটি আমলের উপর অনেক হাদিসও হয়ে থাকে সেটি পরিত্যাজ্য। আর সে ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে শেষ জীবনের আমল যদিও একটিও সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। আর রাফয়েল ইয়াদাইন না করা নবী (স:)এর শেষ জীবনের আমল। আরো অনেক হাদিস দ্বরা রাফেল ইয়াদাইন শেষ জীবনের আমল তা প্রমাণ করা যায় কিন্তু আমরা এখানে একটি হাদিস নিয়ে আলোচনা করবো, কেননা সেই হাদিসটি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)এর থেকে বর্নিত। তাই এই হাদিসটি নিয়ে নিম্নে আলোচনা প্রদান করাহবে। প্রথমে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)কুফায় ছিলেন তার প্রমাণ:
১, আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ)নবী কারীম(স:) এর ইন্তিকালের পরে কুফায় গিয়েছিলেন।
তার প্রমাণ বুখারী শরীফের নিম্নক্ত হাদিস।
ক, আলকামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সিরিয়ায় গমন করলাম (সেখানে পৌছে) দু’রাকাত (নফল) সালাত আদায় করে দু’আ করলাম, হে আল্লাহ্, আপনি আমাকে একজন নেক্কার সাথী মিলিয়ে দিন। তারপর আমি একটি জামাআতের নিকট এসে তাদের নিকট বসলাম। তখন একজন বৃদ্ধ লোক এসে আমার পাশেই বসলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইনি কে? তারা উত্তরে বললেন, ইনি আবূ দারদা (রাঃ)। আমি তখন তাঁকে বললাম, একজন নেক্কার সাথীর জন্য আমি আল্লাহ্র নিকট দু’আ করেছিলাম। আল্লাহ্ আপনাকে মিলিয়ে দিয়েছেন। তিনি বললেন, তুমি কোথাকার বাসিন্দা? আমি বললাম, আমি কুফার বাসিন্দা। তিনি বললেন, (নাবী (সাঃ) - এর জুতা, বালিশ এবং অজুর পাত্র বহন কারী সর্বক্ষণের সহচর (আবদুল্লাহ (রাঃ)) কি তোমাদের ওখানে নেই ? তোমাদের মাঝে কি ঐ ব্যক্তি নেই যাকে আল্লাহ্ শয়তান থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন ? (অর্থাৎ আম্মার ইবন ইয়াসির (রাঃ) তোমাদের মধ্যে কি নাবী (সাঃ) -এর গোপন তথ্য অভিজ্ঞ লোকটি নেই? যিনি ব্যতীত অন্য কেউ এই রহস্য জানেন না (অর্থাৎ হুযায়ফা (রাঃ) তারপর তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) সূরা কি ভাবে পাঠ করতেন? তখন আমি তাঁকে সূরাটি পড়ে শোনালামঃ... (বুখারী ৩৪৭০,৩৪৮৯. ৫৮৪৩ ই:ফা:)
খ, আবু ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আলী (রাঃ) যখন আম্মার (রাঃ)-কে যূদ্ধে অংশ গ্রহনের আহবান জানাতে কুফাবাসীদের নিকট প্রেরণ করলেন, তখন আবু মুসা ও আবু মাসউদ (রাঃ) তার নিকট উপস্হিত হয়ে বললেনঃ তোমার ইসলাম গ্রহণের পর থেকে আমাদের জানামতে বর্তমান বিষয়ে (যুদ্ধের জন্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করার বিষয়ে) দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করার চেয়ে অপছন্দনীয় কোন কাজ করতে আমরা তোমাকে দেখিনি। তখন আম্মার (রাঃ) বললেনঃ যখন থেকে আপনারা ইসলাম গ্রহণ করেছেন আমি আপনাদের কোন কাজ দেখিনি যা আমার কাছে অপছন্দনীয় বিবেচিত হয়েছে বর্তমানের এ কাজে দেরী করা ব্যতীত। তখন আবু মাসউদ (রাঃ) তাদের দু-জনকেই একজোড়া করে পোশাক পরিধান করিয়ে দিলেন। এরপর সকলেই (কুফা) মসজিদের দিকে রওনা হলেন।(বুখারী:৬৬২১ ই:ফা:)
২, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদকে (রা)-এর কুফায় তার অবস্থান
তৎকালিন সময় কুফা শহরে বসতি স্হাপনকারী মুসলমানদের মধ্যে দীনি এলেম প্রচার এবং ফতোয়া প্রদান করার গুরু দায়িত্বে বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদকে (রা) সরকারিভাবে নিয়োগ দান করা হয়। হযরত ওমর (রা) কূফবাসীগণের প্রতি প্রেরীত এক ফরমানে উল্লেখ করেছিলেন যে আবদুল্লাহ ইবনে মসউদের ন্যায় প্রাজ্ঞ ব্যক্তির এখানেই (রাজধানীর মদিনায়) বিশেয় প্রয়োজন ছিল। তা সত্বেও তোমাদের প্রয়োজনের প্রতি লক্ষ্য করে তাঁকে কূফায় পাঠানো হলো। বলাবাহুল্য যে, খলীফার এই ফরমানের দ্বারাই বোঝা যায় যে, আবদুল।লাহ ইবনে মসউদ রা. কত প্রাজ্ঞ ও উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন একজন সাহাবী ছিলেন। ইবনে মাসউদ রা. তৃতীয় খলীফা হযরত ওসমানের রা. খেলাফত আমলের শেষ সময় পর্যন্ত জনগণের মধ্যে কুরআন, হাদিস এবং ফেকাহর তালীম দিতে থাকেন। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতেই কূফায় অন্যুন চার হাজার বিশিষ্ট মুহাদ্দেসম মুফাছছেরও ফকীহর সৃষ্টি হয়েছিল। হযরত আলী রা. যখন রাজধানী যখন রাজধানী স্হানান্তর করে কূফায় আসেন, তখন এখানকার জ্ঞান চর্চার পরিবেশ তাঁকে মুগ্ধ করেছিল। কাঁর মন্তব্য ছিল- আল্লাহ পাক ইবনে মাসউদের রা. কল্যাণ করুন। তিনি এই শহরকে এলেমের নগরীতে পরিণত করে দিয়েছেন।
৩. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) নবী(স:) এর খিদমতে অনেক বছর ছিলেন,
ক, আসওয়াদ ইবন ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবূ মূসা আশআরী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে আমি এবং আমার ভাই ইয়ামান থেকে মদীনায় আগমন করি এবং বেশ কিছুদিন মদীনায় অবস্থান করি। তখন আমরা মনে করতাম যে, আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর পরিবারেরই একজন সদস্য। কেননা আমরা তাঁকে এবং তাঁর মাকে অহরহ নাবী (সাঃ) এর ঘরে যাতায়াত করতে দেখতাম। (বুখারী:৩৪৯১ ই:ফা:)
খ, ....(নাবী (সাঃ) - এর জুতা, বালিশ এবং অজুর পাত্র বহন কারী সর্বক্ষণের সহচর (আবদুল্লাহ (রাঃ)) কি তোমাদের ওখানে নেই ? (বুখারী ৩৪৭০,৩৪৮৯. ৫৮৪৩ ই:ফা:)
৪. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) কুরআনের একজন শিক্ষক ছিলেন,
সুলায়মান ইবন হারব (রহঃ).......মাসরূক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবন আমর (রাঃ)-এর মজলিসে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ)-এর আলোচনা হলে তিনি বললেন, আমি এই ব্যক্তিকে ঐদিন থেকে অত্যন্ত ভালবাসি যেদিন রাসূল (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি, তোমরা চার ব্যক্তি থেকে কুরআন শিক্ষা কর, আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ সর্বপ্রথম তাঁর নাম উল্লেখ করলেন, আবূ হুযায়ফা (রাঃ)-এর আযাদকৃত গোলাম সালিম, উবাই ইবন কা’ব (রাঃ) ও মু‘আয ইবন জাবাল (রাঃ) থেকে। শেষোক্ত দু’জনের মধ্যে কার নাম আগে উল্লেখ করছিলেন শুধু এ কথাটুকু আমার স্মরণ নেই। (বুখারী:৩৪৮৭, ৩৪৮৮, ৩৫৩৪, ৩৫৩৬ ই:ফা:)
৫. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) কুরআনের একজন বদরী সাহাবী ছিলেন,
ক, আবদুল্লাহ ইব্ন মাসউদ(রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) কা’বার দিকে মুখ করে কুরাইশ গোত্রীয় কপিতয় লোক তথা—শায়বা ইব্ন রাবী’আ, উতবা ইব্ন রাবী’আ, ওয়ালিদ ইব্ন উতবা এবং আবূ জেহেল ইব্ন হিশামের বিরুদ্ধে দু’আ করেন। (আবদুল্লাহ ইব্ন মাসউদ(রাঃ)বলেন) আমি আল্লাহ্র নামে সাক্ষ্য দিচ্ছি, অবশ্যই আমি এ সমস্ত লোকদেরকে (বদরের রণাঙ্গনে) নিহত হয়ে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখেছি। রৌদ্রের প্রচন্ডতা দেহগুলোকে বিকৃত করে দিয়েছিল। বস্তুতঃ সে দিনটি ছিল প্রচন্ড গরম।(বুখারী: ৩৬৭৪, ৩৫৭৫ ই:ফা:)
৬. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ)ফতোয়া দানকারী সাহাবী ছিলেন,
ক, আমর ইবন আব্বাস (রহঃ)......হুযায়ল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) বলেছেনঃ, আমি এতে ঐ ফয়সালাই করব যা নাবী (সাঃ) করেছিলেন। অথবা তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ (তা হচ্ছে) কন্যার জন্য সম্পত্তির অর্ধেক আর পুত্র পক্ষের নাতনীদের জন্য ষষ্ঠাংশ। এরপর যা অবশিষ্ট থাকবে তা ভগ্নির জন্য। (বুখারী:৬২৮৬ ই:ফা:)
৭. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) জ্ঞানী সাহাবী ছিলেন,
ক, আদাম (রহঃ)......হুযায়ল ইবন ওরাহবীল (রাঃ) থেকে বর্ণিত ।তিনি বলেনঃ একদা আবু মুসা (রাঃ)-কে কন্যা, পূত্র পক্ষের নাতনী এবং ভগ্নির উত্তরাধিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তখন তিনি বললেনঃ কন্যার জন্য অর্ধেক আর ভগ্নির জন্য অর্ধেক। (তিনি আবু মুসা (রাঃ)বললেন) তোমরা ইবন মাসউদ (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে দেখ, তিনিও হয়ত আমার মত উত্তর দিবেন। সুতরাং ইবন মাসউদ (রাঃ)-কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল এবং আবু মুসা (রাঃ) যা বলেছেনঃ সে সম্পর্কেও তাকে অবহিত করা হল। তিনি বললেনঃ আমি তো গোমরা হয়ে যাব, হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারব না। আমি এ ব্যাপারে তোমাদের মাঝে ঐ ফায়সালাই করব, নাবী (সাঃ) যে ফায়সালা প্রদান করেছিলেন। কন্যা পাবে অর্ধাংশ আর নাতনী পাবে ষষ্ঠাশ। এভাবে দুতৃতীয়াংশ পূরু হবে। অবশিষ্ট এক-তৃতীয়াংশ থাকবে ভন্নির জন্য। এরপর আমরা আবু মুসা (রাঃ)-এর কাছে আসলাম এবং ইবন মাসউদ (রাঃ) যা বললেন, সে সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করলাম। তখন তিনি (আবু মুসা (রাঃ)) বললেনঃ যতদির এ অভিজ্ঞ আলিম (জ্ঞানতাপস) তোমাদের মাঝে বিদ্যমান থাকবে ততদিন আমার কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করো না। (বুখারী:৬২৮০ ই:ফা:)
৮. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) এর গুরুত্ব
ক, হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রা:) বলেন, নবী কারীম (স:) বলেছেন, প্রত্যেক নবীকে সাতজন করে বিশেষ ব্যক্তি দান করা হয়েছে এবং আমাকে দান করা হয়েছে চৌদ্দজন। আমরা বললাম, তারা কার? তিনি বলেন, আমি (আলী), আমার দুই পুত্র (হাসান ও হুসাইন), জাফর,হামযা, আবূ বকর, ওমর ইবনে উমাইর, বিলাল, সালমান, আম্মার, আল-মিকদাদ, হোযাইফা ও আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)। (তিরমিজি ৩৭২৭ ই:ফা:)
খ, হযরত হুযাইফা (রা:) বর্ণনা করিয়াছেন যে, রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলিয়াছেন, জানিনা আমি তোমাদের মাঝে কতদিন জীবিত থাকিব। অতঃপর আবু বকর ও উ’মার রদিয়াল্লহু আ’নহুমা এর প্রতি ইঙ্গিত করিয়া বলিলেন, তোমরা আমার পর এই দুইজনের অনুসরণ করিও; আর আ’ম্মারের (রদিয়াল্লহু আ’নহু) চরিত্র অবলম্বন করিও ও ইবনে মাসঊ’দ (রা:) যাহা কিছু বর্ণনা করেন উহাকে সত্য জানিও। (তিরমিযী)
গ, হযরত আলী (রা:) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসূল (স:) বলেছেন, আমি যদি তাদের কাউকে পরামর্শ ব্যতীত আমীর নিয়োগ করতাম, তবে উম্মে আবদকে (আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদকে) আমীর নিয়োগ করতাম। (তিরমিজি: ৩৭৪৬, ৩৭৪৭ ই:ফা:)
এর পরও যারা আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ)-এর হাদিস দলিল হিসাবে গ্রহণ করেন না তাদেরকে প্রশ্ন করি আপনারা কি নিম্ন বর্নিত হাদিস গুলোকেও অগ্রহনযোগ্য বলবেন???
১. আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) সালাত আদায় করলেন। রাবী ইবরাহীম (রহঃ) বলেনঃ আমার জানানেই, তিনি বেশী করেছেন বা কম করেছেন। সালাত ফিরানোর পর তাঁকে বলা হলো, ইয়া রাসূল (সাঃ) ! সালাতের মধ্যে নতুন কিছু হয়েছে কি? তিনি বললেনঃ তা কী? তাঁরা বললেনঃ আপনি তো এরুপ এরপ সালাত আদায় করলেন। তিনি তখন তাঁর দু’পা ঘুয়িয়ে কিবলামুখী হলেন। আর দু’টি সিজদা আদায় করলেন। এরপর সালাম ফিরালেন। পরে তিনি আমাদের দিকে ফিরে বললেনঃ যদি সালাত সম্পর্কে নতুন কিছু হতো, তবে অবশ্যই তোমাদের তা জানিয়ে দিতাম। কিন্তু আমি তো তোমাদের মত একজন মানুষ। তোমরা যেমন ভুল করে থাক, আমিও তোমাদের মত ভুলে যায়। আমি কোন সময় ভুলে গেলে তোমরা আমাকে স্মরণ করিয়ে দেবে। তোমাদের কেউ সালাত সম্বন্ধে সন্দেহে পতিত হলে সে যেন নিঃসন্দেহে হওয়ার চেষ্টা করে এবং সে অনুযায়ী সালাত পূর্ণ করে। তারপর সে সালাম ফিরিয়ে সিজদা আদায় করে।(বুখারী : ৩৯২ ই:ফা:)
২. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী (সাঃ) একদা তাদের নিয়ে যোহরের সালাত আদায় করলেন। তিনি সালাতে কিছু অধিক করলেন অথবা কিছু কম করলেন। মানসুর বলেন! এই কম-বেশির ব্যাপারে সন্দেহ ইবরাহীমের না আলকামার তা আমার জানানেই। রাবী বলেন আরয করা হল, ইয়া রাসুলুল্লাহ(সাঃ)! সালাতের মাঝে কি কিছু কমিয়ে দেয়া হয়েছে না আপনি ভুলে গিয়েছেন? তিনি বললেনঃ কি হয়েছে? সাহাবাগণ বললেনঃ আপনি এভাবে এভাবে সালাত আদায় করেছেন। রাবী বলেন- তখন তিনি তাদেরকে নিয়ে দুটি সিজদা করেন। এরপর বললেনঃ এ দুটি সিজদা ঐ ব্যক্তির জন্য যার স্বরণ নেই যে, সালাতে সে কি বেশি কিছু করেছে, না কম করেছে। এমন অবস্থায় সে চিন্তা করবে (প্রবল ধারণার ভিত্তিতে আমল করবে), আর যা বাকি থাকবে তা পুরা করে নেবে! এরপর দু টি সিজদা আদায় করবে। (বুখারী: ৬২১৬ ই:ফা: )
৩. আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (ইসলামের প্রাথমিক যুগে) সালাতে রত থাকা অবস্থায় নাবী (সাঃ) -কে আমরা সালাম করতাম, তিনিও আমাদের সালামের উত্তর দিতেন। যখন আমরা নাজাশীর (হাবশা) কাছ থেকে ফিরে এলাম, তখন সালাতে রত অবস্থায় তাঁকে সালাম করলাম, কিন্তু তিনি সালামের জবাব দিলেন না। আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসূল (সাঃ) আমরা (সালাতের মধ্যে) আপনাকে সালাম করতাম এবং আপনিও সালামের উত্তর দিতেন। কিন্তু আজ আপনি আমাদের সালামের জবাব দিলেন না? তিনি বললেন, সালাতের মধ্যে আল্লাহ্র দিকে নিবিষ্টতা থাকে। রাবী বলেন, আমি ইব্রাহীম নাখয়ীকে জিজ্ঞাসা করলাম, (সালারেত মধ্যে কেউ সালাম করলে) আপনি কি করেন? তিনি বললেন, আমি মনে মনে জবাব দিয়ে দেই।(বুখারী : ৩৫৯৬, ১১৪৩, ১১২৫ ই:ফা:)
৪. আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ). বলেছেনঃ বুদ্ধিমান, বিচক্ষণ ও জ্ঞানী লোকেরা আমার নিকটবর্তী হয়ে দাঁড়াবে। অতপর পর্যায়ক্রমে তাদের কাছাকাছি যোগ্যতাসম্পন্ন লোকেরা দাঁড়াবে। তিনি একথা তিনবার বলেছেন। সাবধান! তোমরা (মসজিদে) বাজারের মত শোরগোল করবে না। (মুসলিম: ৮৫৬ ই:ফা:)
৫. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) হবে বর্নিত। তিনি বলেন, (নামাযরত অবস্থায়) রাসূল(স:) প্রত্যেকবার উঠা, নিচু হওয়া, দাড়ানো ও বসার সময় 'আল্লাহু আকবার' বলতেন। হযরত আবু বকর এবং ওমর (রা:)-ও এরুপ আমল করতেন।-সহীহ (তিরমিজি: ২৪০ ই:ফা:)
৬. আব্দুল্লাহ(রা) থেকে বর্নিত। রাসূল(সা:) তার ডান ও বামদিকে সালাম ফিরাতেন; এমনকি তার দুই গালের শ্রভ্রতা দেখা যেতো। তিনি বলতেন: আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহভ। (ইবনে মাজাহ: ৯১৪, তিরমিজি: ২৭৭ ই:ফা:)
৭. আব্দুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) রা: সূত্রে রাসূল (স:) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন তোমাদের কারো যদি সালাতে সন্দেহের উদ্রেক হয় তা হলে যেন ভেবে দেখে। যা সে সঠিক মনে করে তা পূর্ণ করকে, তারপর দু'টি সিজদা করে নেবে। (নাসায়ী: ১২৪৪ ই:ফা:)
৮. আবদুল্লাহ্ (ইবন মাসউদ) (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) এর সামনে এক ব্যক্তির সম্পর্কে আলোচনা করা হল- সকাল বেল পর্যন্ত সে ঘুমিয়েই কাটিয়েছে, সালাতের জন্য (যথা সময়ে) জাগ্রত হয়নি, তখন (নাবী (সাঃ) ) ইরশাদ করলেনঃ শয়তান তার কানে পেশাব করে দিয়েছে।(বুখারী: ১০৭৮ ই:ফা:)
৯. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর লানত বর্ষিত হোক সে সব নারীদের উপর যারা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে উলকি উরকীর্ন করে এবং যারা উৎকীর্ণ করায়, আর সে সব নারীদের উপর যারা চুল, ভুরু উঠিয়ে ফেলে এবং সে সব নারীদের উপর যারা সৌন্দর্যের জন্যে সামনের দাঁত কেটে সরু করে দাতের মাঝে ফাক সৃষ্টি করে, যা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন এনে দেয়।রাবী বলেনঃ আমি কেন তার উপর লানত করবো না, যাকে নাবী (সাঃ) লানত করেছেন? আর আল্লাহর কিতাবে আছে এই রাসূল (সাঃ)তোমাদের কাছে যে বিধান এনেছেন তা গ্রহণ করো । (বুখারী: ৫৫০৭,৫৫১৪,৫৫২৪ ই:ফা:)
১০. “আবদুল্লাহ্ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেনঃ তোমার দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করাটা একটা বেয়াদবী”। (তিরমিজি ১২ তা:প্র:)
১১. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ্ বলেছেনঃ তোমরা শুকনো গোবর দিয়ে আর হাড় দিয়ে ইস্তিনজা করবে না। কেননা এগুলো তোমাদের ভাই জ্বিনদের খাদ্য। (তিরমিজি ১৮ তা: প্র:, মুসলিম:৮৮৯ ই:ফা:)
১২. আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত । তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) কুকুরের মূল্য, গনকের পারিশ্রমিক এবং বেশ্যার উপার্জন গ্রহন করতে নিষেধ করেছেন । (বুখারী:৪৯৫৫, ৫৩৪৯ ই:ফা:)
১৩. আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যক্তি (সাহাবী) নাবী (সাঃ) -কে জিজ্ঞাসা করলেন, কোন আমলটি সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ যথাসময়ে নামায আদায় করা, মাতাপিতার সাথে সৎবহ�
আপনার হার্টলাইন বা হৃদয়রেখা আপনার সম্পর্কে অনেক কিছুই বলে। আপনার
ভূতভবিষ্যত্ না বলতে পারলেও, আপনি যে মানুষটা কেমন, তার একটা নিটোল ছবি
তুলে ধারতে পারে আপনার হাতের হৃদয়রেখা। সেই ছবি নিয়ে নাচাচাড়া করলে,
ভবিষ্যতের মানুষটি কেমন হবে, তার একটা আভাস তো মেলেই। যে হৃদয়রেখা নিয়ে এত
কথা, সেই রেখার সঙ্গে পরিচয় আছে? নামে পরিচয় না থাক, চেনারেখা তো বটেই।
নিজের হাতের দিকে একবার তাকান। আপনার কড়ে আঙুলের একটি নীচ থেকে যে গাঢ়
রেখা মধ্যমা, তর্জনী বা বুড়োআঙুল ( লোক বিশেষে ) বরাবর চলে গেছে, সেটাই
আপনার হার্টলাইন বা হৃদয়রেখা। অবস্থান অনুযায়ী চারটে ক্যাটেগরিতে বাগ করা
যায়। হৃদয়রেখার সূচনাই একজনের থেকে আর একজনকে আলাদা করে দেয়। নীচে মিলিয়ে
দেখুন, আপনি কেমন :
A : আপনার হৃদয়রেখার শুরুটা যদি মধ্যমার নীচ থেকে হয়, নিশ্চিতভাবেই আপনার মধ্যে নির্ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। ভালো লিডার হতে পারেন। কারও তোয়াক্কা রাখেন না। চেষ্টা করেন অন্যের উপর নির্ভরশীল না হতে। প্রচণ্ডই উচ্চাকাঙ্ক্ষী। এত গুণের সমাহার যাঁর মধ্যে, তাঁর বুদ্ধিমত্তা নিয়ে না বললেও চলে। তবে, সংবেদনশীলতা আপনার মধ্যে কমই। চট করে উত্তেজিতেও হয়ে পড়েন না। ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল মানসিকতা। যে কারণে চটজলদি সিদ্ধান্ত না নিয়ে, ঠান্ডামাথায় ভেবেচিন্তে পা ফেলেন।
B : হৃদয়রেখা যখন মধ্যমা পেরিয়ে তর্জনীর গোড়া থেকে শুরু হয়, ধরে নেওয়া যায়, সেই ব্যক্তি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আবেগের বশবর্তী না-হয়ে, কমন সেন্সে জোর দেন। এই ক্যাটেগরির মানুষজন কিন্তু খুবই সহানুভূতিশীল, অনভূতিপ্রবণ। অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়েন। অনেক ক্ষেত্রেই দ্বিধান্বিত। চারপাশের লোকজনকে নিয়ে সচেতন থাকে। অন্যরা এঁদের বিশ্বাস করেন।
C : হৃদয়রেখার শুরুটা যদি তর্জনীর মাঝবরাবর জায়গা থেকে আরম্ভ হয়, তাদের সঙ্গে A ক্যাটেগরির লোকজনের মিল আছে। সব কিছুতেই অদ্ভুতরকম মিল দেখা যায়।
D : হৃদয়রেখার শুরুর অবস্থান যদি তর্জনী ও বুড়ো আঙুলের মাঝবরাবর হয়, তাঁরা কিন্তু খুবই নরম মনের মানুষ হয়। কোনও অসৎ উদ্দেশ্য এঁদের মধ্যে কাজ করে না। পড়াশোনাসহ সবকিছুতেই মনোযোগী। এবং, প্রেমিক বা মানুষ হিসেবেও যথেষ্ট কেয়ারিং।
- See more at: http://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2015/08/27/261688#sthash.Y8Iwa14Q.dpufA : আপনার হৃদয়রেখার শুরুটা যদি মধ্যমার নীচ থেকে হয়, নিশ্চিতভাবেই আপনার মধ্যে নির্ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। ভালো লিডার হতে পারেন। কারও তোয়াক্কা রাখেন না। চেষ্টা করেন অন্যের উপর নির্ভরশীল না হতে। প্রচণ্ডই উচ্চাকাঙ্ক্ষী। এত গুণের সমাহার যাঁর মধ্যে, তাঁর বুদ্ধিমত্তা নিয়ে না বললেও চলে। তবে, সংবেদনশীলতা আপনার মধ্যে কমই। চট করে উত্তেজিতেও হয়ে পড়েন না। ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল মানসিকতা। যে কারণে চটজলদি সিদ্ধান্ত না নিয়ে, ঠান্ডামাথায় ভেবেচিন্তে পা ফেলেন।
B : হৃদয়রেখা যখন মধ্যমা পেরিয়ে তর্জনীর গোড়া থেকে শুরু হয়, ধরে নেওয়া যায়, সেই ব্যক্তি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আবেগের বশবর্তী না-হয়ে, কমন সেন্সে জোর দেন। এই ক্যাটেগরির মানুষজন কিন্তু খুবই সহানুভূতিশীল, অনভূতিপ্রবণ। অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়েন। অনেক ক্ষেত্রেই দ্বিধান্বিত। চারপাশের লোকজনকে নিয়ে সচেতন থাকে। অন্যরা এঁদের বিশ্বাস করেন।
C : হৃদয়রেখার শুরুটা যদি তর্জনীর মাঝবরাবর জায়গা থেকে আরম্ভ হয়, তাদের সঙ্গে A ক্যাটেগরির লোকজনের মিল আছে। সব কিছুতেই অদ্ভুতরকম মিল দেখা যায়।
D : হৃদয়রেখার শুরুর অবস্থান যদি তর্জনী ও বুড়ো আঙুলের মাঝবরাবর হয়, তাঁরা কিন্তু খুবই নরম মনের মানুষ হয়। কোনও অসৎ উদ্দেশ্য এঁদের মধ্যে কাজ করে না। পড়াশোনাসহ সবকিছুতেই মনোযোগী। এবং, প্রেমিক বা মানুষ হিসেবেও যথেষ্ট কেয়ারিং।
আপনার হার্টলাইন বা হৃদয়রেখা আপনার সম্পর্কে অনেক কিছুই বলে। আপনার
ভূতভবিষ্যত্ না বলতে পারলেও, আপনি যে মানুষটা কেমন, তার একটা নিটোল ছবি
তুলে ধারতে পারে আপনার হাতের হৃদয়রেখা। সেই ছবি নিয়ে নাচাচাড়া করলে,
ভবিষ্যতের মানুষটি কেমন হবে, তার একটা আভাস তো মেলেই। যে হৃদয়রেখা নিয়ে এত
কথা, সেই রেখার সঙ্গে পরিচয় আছে? নামে পরিচয় না থাক, চেনারেখা তো বটেই।
নিজের হাতের দিকে একবার তাকান। আপনার কড়ে আঙুলের একটি নীচ থেকে যে গাঢ়
রেখা মধ্যমা, তর্জনী বা বুড়োআঙুল ( লোক বিশেষে ) বরাবর চলে গেছে, সেটাই
আপনার হার্টলাইন বা হৃদয়রেখা। অবস্থান অনুযায়ী চারটে ক্যাটেগরিতে বাগ করা
যায়। হৃদয়রেখার সূচনাই একজনের থেকে আর একজনকে আলাদা করে দেয়। নীচে মিলিয়ে
দেখুন, আপনি কেমন :
A : আপনার হৃদয়রেখার শুরুটা যদি মধ্যমার নীচ থেকে হয়, নিশ্চিতভাবেই আপনার মধ্যে নির্ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। ভালো লিডার হতে পারেন। কারও তোয়াক্কা রাখেন না। চেষ্টা করেন অন্যের উপর নির্ভরশীল না হতে। প্রচণ্ডই উচ্চাকাঙ্ক্ষী। এত গুণের সমাহার যাঁর মধ্যে, তাঁর বুদ্ধিমত্তা নিয়ে না বললেও চলে। তবে, সংবেদনশীলতা আপনার মধ্যে কমই। চট করে উত্তেজিতেও হয়ে পড়েন না। ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল মানসিকতা। যে কারণে চটজলদি সিদ্ধান্ত না নিয়ে, ঠান্ডামাথায় ভেবেচিন্তে পা ফেলেন।
B : হৃদয়রেখা যখন মধ্যমা পেরিয়ে তর্জনীর গোড়া থেকে শুরু হয়, ধরে নেওয়া যায়, সেই ব্যক্তি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আবেগের বশবর্তী না-হয়ে, কমন সেন্সে জোর দেন। এই ক্যাটেগরির মানুষজন কিন্তু খুবই সহানুভূতিশীল, অনভূতিপ্রবণ। অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়েন। অনেক ক্ষেত্রেই দ্বিধান্বিত। চারপাশের লোকজনকে নিয়ে সচেতন থাকে। অন্যরা এঁদের বিশ্বাস করেন।
C : হৃদয়রেখার শুরুটা যদি তর্জনীর মাঝবরাবর জায়গা থেকে আরম্ভ হয়, তাদের সঙ্গে A ক্যাটেগরির লোকজনের মিল আছে। সব কিছুতেই অদ্ভুতরকম মিল দেখা যায়।
D : হৃদয়রেখার শুরুর অবস্থান যদি তর্জনী ও বুড়ো আঙুলের মাঝবরাবর হয়, তাঁরা কিন্তু খুবই নরম মনের মানুষ হয়। কোনও অসৎ উদ্দেশ্য এঁদের মধ্যে কাজ করে না। পড়াশোনাসহ সবকিছুতেই মনোযোগী। এবং, প্রেমিক বা মানুষ হিসেবেও যথেষ্ট কেয়ারিং।
- See more at: http://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2015/08/27/261688#sthash.Y8Iwa14Q.dpufA : আপনার হৃদয়রেখার শুরুটা যদি মধ্যমার নীচ থেকে হয়, নিশ্চিতভাবেই আপনার মধ্যে নির্ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। ভালো লিডার হতে পারেন। কারও তোয়াক্কা রাখেন না। চেষ্টা করেন অন্যের উপর নির্ভরশীল না হতে। প্রচণ্ডই উচ্চাকাঙ্ক্ষী। এত গুণের সমাহার যাঁর মধ্যে, তাঁর বুদ্ধিমত্তা নিয়ে না বললেও চলে। তবে, সংবেদনশীলতা আপনার মধ্যে কমই। চট করে উত্তেজিতেও হয়ে পড়েন না। ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল মানসিকতা। যে কারণে চটজলদি সিদ্ধান্ত না নিয়ে, ঠান্ডামাথায় ভেবেচিন্তে পা ফেলেন।
B : হৃদয়রেখা যখন মধ্যমা পেরিয়ে তর্জনীর গোড়া থেকে শুরু হয়, ধরে নেওয়া যায়, সেই ব্যক্তি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আবেগের বশবর্তী না-হয়ে, কমন সেন্সে জোর দেন। এই ক্যাটেগরির মানুষজন কিন্তু খুবই সহানুভূতিশীল, অনভূতিপ্রবণ। অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়েন। অনেক ক্ষেত্রেই দ্বিধান্বিত। চারপাশের লোকজনকে নিয়ে সচেতন থাকে। অন্যরা এঁদের বিশ্বাস করেন।
C : হৃদয়রেখার শুরুটা যদি তর্জনীর মাঝবরাবর জায়গা থেকে আরম্ভ হয়, তাদের সঙ্গে A ক্যাটেগরির লোকজনের মিল আছে। সব কিছুতেই অদ্ভুতরকম মিল দেখা যায়।
D : হৃদয়রেখার শুরুর অবস্থান যদি তর্জনী ও বুড়ো আঙুলের মাঝবরাবর হয়, তাঁরা কিন্তু খুবই নরম মনের মানুষ হয়। কোনও অসৎ উদ্দেশ্য এঁদের মধ্যে কাজ করে না। পড়াশোনাসহ সবকিছুতেই মনোযোগী। এবং, প্রেমিক বা মানুষ হিসেবেও যথেষ্ট কেয়ারিং।
No comments:
Post a Comment