“মিয়া বিবি রাজি” থাকাটাই একটি বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। যদিও আমাদের সমাজ ব্যবস্থা বিয়ের রীতিনীতির ব্যাপারে আগের তুলনায় অনেকটাই উদার, তারপরও প্রত্যেক ব্যক্তিরই নির্দিষ্ট ভাবে বিয়ের প্রস্তুতি থাকা জরুরী। যিনি আপনার জীবনসঙ্গী হতে যাচ্ছেন তিনি যেন বুঝতে পারেন বিয়েটা আপনার জন্য নিছক একটি ঘটনা বা দায় নয়; আপনি সংসার ও সম্পর্কের দায়িত্বের ব্যাপারে পর্যাপ্ত সচেতন। তাই বিয়ে করার আগেই যাচাই করুন নিজেকে; ভাবুন, আপনি প্রস্তুত তো?
প্রথমেই কী ভাববেন?
বিয়ের পিড়ি তে বসার আগে ভেবে দেখুন, আপনি এত বড় দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবেন কিনা। বিয়ে কোন ছেলে খেলা নয়। একজন মানুষের সুখ-দুঃখের সম্পূর্ন ভাগীদার হতে হবে আপনাকে। চাইলেই অবহেলা করে এড়িয়ে যেতে পারবেন না। ঘরের কাজ হোক বা বাইরের, একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে। বসে বসে আদেশ করলেই হবে না; নিজের ইচ্ছা খুশি মত চলা যাবে না।
আপনি আর্থিকভাবে সচ্ছল তো?
সুস্থ সুন্দর বৈবাহিক জীবনের জন্য ভালোবাসার কোন বিকল্প নেই, তাই বলে টাকার কোন প্রয়োজন নেই এটা চিন্তা করা বোকামি। এতে কোন ভাল ফল আসবে না। সাংসারিক জীবনে টাকা বা আর্থিক সচ্ছলতার গুরুত্ব অনেক। বিয়ের প্রস্তুতি নেয়ার একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হলো আর্থিক সচ্ছলতা আনায়ন।
দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া আছে তো?
যার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে যাচ্ছেন তার সাথে আপনার বোঝাপড়া কেমন সেটা লক্ষ্য রাখুন। একে অপরকে বোঝার চেষ্টা না করলে সে সম্পর্ক বেশি দিন স্থায়ী হয় না।
দুজনের পছন্দ-অপছন্দ, কথা-বার্তা সব একই হতে হবে এমন কোন কথা নেই। তবে দুজন একসাথে করতে পছন্দ করে এমন কিছু না থাকলে সাংসারিক জীবন নিস্তেজ হয়ে পরে। স্ত্রী চাকরি করবেন কিনা, সে যৌথ পরিবারে থাকতে চায় কিনা, স্বামীর কোন ব্যাপারে স্ত্রীর অভিযোগ আছে কিনা সব কিছু আলোচনা করে নেয়া ভাল।
পরিবারকে প্রাধান্য দিন !
অনেকে ভাবেন বিয়ে তো আমাদের দুজনের মধ্যে। আমাদের বাবা-মার তাতে কোন সমস্যা থাকার কথা না। সারা জীবন আমাদের দুই জনকে একসাথে থাকতে হবে। আমাদের বাবা-মার তো আর থাকতে হবে না।
এটা সত্যি যে সারা জীবন আপনাদের দুজনকেই একসাথে থাকতে হবে, কিন্তু তার মানে এই না যে আপনার পরিবার এর সাথে সম্পৃক্ত নয়। আপনি যতটা ভাবছেন, তার থেকেও প্রায় কয়েক গুণ বেশি সম্পৃক্ততা তাদের আছে। সুতরাং পরিবার পরিজনদের অবহেলা করে বিয়ে করা উচিৎ হবে না।
কবে বাচ্চা নেবেন?
বিয়ের কয় বছরের মধ্যে সন্তান নিতে চান এবং কয়টি সন্তান নিতে চান, বিয়ের প্রস্তুতি হিসেবে সে সব বিষয়ে আলোচনা করে রাখা ভাল। অনেক ছেলে মেয়ে খুব বেশি মাত্রায় ক্যারিয়ার সচেতন হয়ে থাকে। তাই একটা পর্যায়ে না পৌঁছে তারা সন্তান নিতে চায় না। আবার কিছু মানুষ আছে যারা বিয়ের ২-১ বছরের মধ্যেই সন্তানের বাবা মা হতে চায়। সন্তান নেয়ার সময়ের ব্যাপারে আপনারা এক মত তো? আলোচনা করে নিন।
বিয়ের পর কোথায় থাকবেন?
বিয়ের পর কোথায় বাস করবেন সেটা আগে থেকেই ঠিক করে রাখা ভাল। চাকরির বা অন্য কোন কারণে দুজনের দুই স্থানে থাকতে হলে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
শুধু কেনাকাটা করাই বিয়ের প্রস্তুতি নয়। বিয়ের আগে মানসিক ও আর্থিকভাবেও প্রস্তুত থাকাটা জরুরী। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও রেষারেষি এড়াতে আগে থেকেই এসব বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা দেয়া জরুরী।
No comments:
Post a Comment