সাগর
 কন্যা হাতিয়া এ আবার কেমন নাম। বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন গ্রাম হল 
নোয়াখালী জেলার হাতিয়া গ্রাম। অতি প্রচীন কালে বঙ্গোপসাগর থেকে এই হাতিয়া 
জেলার উৎপত্তি হয়। বেশ কিছু দিন আগে মেঘনার আঘাতে এ দ্বীপটি বিলুপ্ত হতে 
বসে ছিল। কিন্তু বর্তমানে এ গ্রামে প্রায় ৮ হাজার লোকের বসবাস। 
      
এ
 দ্বীপটি অন্য সব দ্বীপ থেকে বিছিন্ন হলেও এ দ্বীপের মানুষের মধ্যে রয়েছে 
অসম্ভব মায়া মমতা। তাদের জীবিকার প্রধান অংশ আসে কৃষি কাজ ও মাছ ধরা থেকে। 
দক্ষিনে বঙ্গোপসাগর আর উত্তরে মেঘনা নদী মাঝ অংশ দিয়ে বয়ে গেছে অসীম 
রাস্তা, রাস্তার দুধারে অসংখ্য ফুলের গাছ। মেঘনা নদীর আঘাতে প্রায় প্রতি 
বছর বিপুল সংখ্যক ক্ষয় ক্ষতি হয়। প্রতিনিয়ত ভেসে যায় হাজার হাজার ঘর বাড়ি। 
বছরে এরা দুবার তাদের বাসস্থান গড়ে তোলে। হাতিয়া দ্বীপটি বিচ্ছিন্ন হলেও 
শিক্ষা চিকিৎসার কোন অভাব নেই। 
বিয়েতে
 এরা রং ছিঠিয়ে আনন্দ করে। মাঝে মাঝে এদরে মধ্যে নিচুতার পরিচয় মেলে। এ 
গ্রামের একটি ঐতিহ্য হল পালকি। এ পালকিকে ঘিরে রয়েছে বিভিন্ন ঐতহ্যিবাহী 
ইতিহাস। পালকিকে ঘিরে গ্রামের বেহারা বৃদ্ধ, ছোট, বড় সকলের কন্ঠে একযোগ 
গেয়ে উঠে গান, গ্রামের কারো বাড়িতে একটি পালকি থাকলে তারা মনে করে তাদের 
অনেককিছু আছে। পালকি কাঁধে নিয়ে বেহারা গেয়ে উঠে,
      
"রং এর ঢোল হারকির ঢোল, 
ঢুলি বাজায় ঢুলির ঢোল।
বাপের ঘর ছাড়ি কন্যায় যায় স্বামীর ঘর।"
  হাতিয়া
 জেলাটি ফেনী জেলার দ্বিগুন। প্রতি বছর মেঘনার আঘাতে এ দ্বীপটির প্রায় ১ 
কিঃ মিঃ করে ভাঙ্গে, প্রায় প্রতিটি পরিবার বছরে ২ বার তাদের বাসস্থান 
পরিবর্তন করে। হাতিয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর। এদের কৃষি শস্য 
বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার চাইতে অনেক বেশি। বাংলাদেশ সরকার এ অঞ্চলের আশু 
প্রতিকারের ব্যবস্থা করলে এ দ্বিপটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা 
পালন করতে সক্ষম হবে। ঢুলি বাজায় ঢুলির ঢোল।
বাপের ঘর ছাড়ি কন্যায় যায় স্বামীর ঘর।"
 
No comments:
Post a Comment