
   
   একদিন পূর্ণিমার রজনীতে তোমায় খুঁজিতে
   
   
   গিয়েছিলাম তোমার দ্বারে চতুর্দশ রজনীতে।
   
   
   কথা ছিল দেখা হবে তোমাদের পুকুর পাড়ে
   
   
   অপেক্ষার পর ফিরে এলাম  টিনোর চালা ঘরে।
   
   
   দেখা না পাওয়ার ব্যাথায় সুধালাম টিনোরে
   
   
   হাঁ ভাই দেখে ছিলাম তারে আজ দ্বিপ্রহরে।
   
   
   উড়ে আসে স্রোতের মত ভাবনা প্রাণের তরে
   
   
          অন্তর আত্মায় উতল সুর বাজে বারে রারে।
   
   
              বিরহিণী কেন ছেড়ে গেলে বিরহগুণ্ঠন তলে
   
   
                    হৃদয়ের মাঝেতে রোদন বারবার উঠে দুলে।  
   
   
                         নীরবে হৃদয়ের মাঝে অজানা বেদনার গুঞ্জন
   
   
                     হেসে খেলে একলা চলি অশ্রুঝরে  সারা ক্ষণ।
   
   
                      তবে কী আসেনি আমার উপরে অভিমানে ?
   
   
                    নিজেকে প্রশ্ন করে পাইনা তার জবাব তখনে।
   
   
   অলি গলি আশ্রম মঠ খুঁজেছি অগণন কুঞ্জবন
   
   
            সর্বত্র তন্নতন্ন করে খুঁজে পেলাম না দরশন।
   
   
                 কতদিন একত্রে কাটিয়েছি অভয় আলাপে  
   
   
              মনের মাঝে দপ দপ করে ধ্বনি চন্দ্রাভাপে।
   
   
            যতই ভাবি দেখিতে পাই সামনে অন্ধকার
   
   
         হৃদয়ে দোলা দেয় আচ্ছন্ন যত সব সংহার।
   
   
   কোথায় গেল আজ আমার প্রাণের আকর্ষণ
   
   
   যাকে পাবার জন্যে জীবনে করেছি সুখান্বেষণ ।
   
   
   মনে প্রাণে দিয়েছি তাকে সদা আত্ম সম্মান
   
   
   আমাকে নিয়ে ছিল তার অনেক অভিমান।
   
   
   তবু্ও আমার কাছে ছিলে তুমি অসাধারণ
   
   
                                        সব কিছু ভুলে আমায় আজ করলে অযতন।
   
   
   তোমাকে না পেয়ে অন্তর আত্মা মরুময়
   
   
         হারিয়ে গেছি আমি ভাগ্যের হলো না উদয়।
   
   
             আমি আসতে চাইনি এ পথে কোন কাল
   
   
                  তোমারি পরশে পেয়েছি মায়া ভরা ধরাতল।
   
   
            আঁধারে ফেলে তুমি তো চলে গেলে চিরন্তন
   
   
             দিবানিশি থাকে ব্যাকুল অপেক্ষায় দু-নয়ন।
   
   
          তোমাকে নিয়ে ভাবি এই বুঝি এলো এখন
   
   
     শুধু অপেক্ষার পালা দেয়াল ঘেরা কক্ষে সর্বক্ষণ।
   
   
    পাষাণ হৃদয়ে তোমার অলক্ষ্যে বেঁচে আছি করুণ নিশ্বাসে    
   
   
                                      জীবন স্রোতে ভাসিয়ে ছিলাম নিজেকে 
   তোমায় বিশ্বাসে।  
   
   
   এ যে ছিল আমার জীবনে কতবড় ভ্রান্ত বিলাস
   
   
   আঠারো বছর কেটেছে সাথে গভীর প্রেমা সুধারস।
   
   
   যা তুমি আমাকে দিয়েছ স্মৃতিভরা পথের উপহার
   
   
   ক্ষণকাল পথ চলে চুমকে উঠি দেখি ঘোর অন্ধকার।
   
   
   আশাহীন খরস্রোতে ভাসিয়ে দিয়ে করেছ ঘরছাড়া
   
   
   বেদনার শূলে নিত্য জ্বলি নেই কেন তোমার সাড়া।
   
   
   পথ চলতে চলতে পাই তোমার চঞ্চল পদধ্বনি
   
   
    নিভে দাও আমার হৃদয়ের ব্যাকুল প্রদীপখানি।
   
   
   আজ মনে পড়ে পশ্চাতের স্মৃতির কাহিনী
   
   
   গ্রাম্য স্কুলের একই ক্লাসের পড়তাম দু-জনি।
   
   
   মিথিলার সঙ্গে পাশ করে ভর্তি হলাম কলেজে
   
   
   দু-জনে স্নাতকোত্তর পাশে গেলাম আমি চাকুরীর খোঁজে।
   
   
       অশান্তির হাহাকার ধ্বনি বহে অদৃষ্টের পরিহাস
   
   
                                           মাতালের মত ব্যাকুলতা নিয়ে 
   কাটাই অবকাশ।
   
   
   কোথায় এখন অবস্থান তোমার ওগো স্বরস্বতী
   
   
   ধৈর্য্য হারিয়ে কেন এমন সিদ্ধান্তে গড়লে বসতি।
   
   
   হৃদয়ের প্রলয় তাপে আমি খুঁজি শুধু তোমারে
   
   
   অন্তর আত্মার পরিতাপে খুঁজে বেড়াই ভুবন ঘুরে।
   
   
   হৃদয়ের তাপে রাজপথে দাঁড়িয়ে ডাকি তোমায়
   
   
   পেতাম আমি প্রাণে আত্ম তৃপ্তি আমৃত সুধাময়।
   
   
   হঠাৎ করে মিথিলা এসে দাড়ায়  দক্ষিণ দ্বারে
   
   
   আজ আমি তোমাকে নিতে এসেছি নিজ অধিকারে।
   
   
   চল আমার সাথে কথা হবে তোমার সঙ্গে সেখানে
   
   
                তুমি ফিরার আগে পড়ে যাই জ্ঞান হারিয়ে  স্বস্থানে।
   
   
   ডাক্তার বাবু পাঠিয়ে দেন পরিক্ষার জন্যে বড় শহরে
   
   
   পরীক্ষ নিরীক্ষার জন্যে থাকতে হয় ডাক্তারের সহচরে।
   
   
   এভাবে নিরবচ্ছিন্ন জীবন কাটে শান্তিতলা হাসপাতালে
   
   
   ম্রিয়মাণ বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রতিক্ষণে রোষে উথলিয়ে প্রাণ জ্বলে।
   
   
   জীবন যন্ত্রণার বজ্রাঘাতে জানাতে পারিনি তোমায় খুলে
   
   
   ছয় মাস পরে ডাক্তার বাবু জানিয়েছে  ব্লাড ক্যান্সার বলে।
   
   
   অকাতরে ভেসে গেল জীবনের সুখ স্বপ্ন ধরণীর তলে
   
   
   সুখ স্বর্গের কুসুমাঞ্জলি ব্যথায় লুকিয়েছে হৃদয় অনলে।
   
   
   প্রেমের কাননে ফুটিবেনা ফুল দুরারোগ্য ব্যধির কারণে
   
   
   শোন সুজন,তোমাকে ভালবাসী রাখিব চিরকাল মনে।
   
   
   চির অনুরক্ত  হয়ে থাকিব তোমাকে জড়িয়ে পরকালে
   
   
   ভুলে যাও তুমি বিধাতা মিলন দেয়নি আমাদের একালে।
   
   
   শান্তিরসে মগ্ন হয়ে কাটাইব যামিনী তোমার চরন তলে
   
   
   অভাগিনী কেঁদে বিষন্ন হৃদয়ে কথা গুলি বলে নয়ন জলে।
   
   
   আমি দেশের বাহিরে কাটিয়েছি তিন তিনটি বছর
   
   
    টাকা কড়ি জমিয়ে এনেছি তোমার হীরকের হার।
   
   
   কোথায় যেতে চাও আমাকে ফেলে জ্বলন্ত অনলে
   
   
   চিকিৎসা তো করতে দাও আমাকে আতঙ্কের কালে।
 
No comments:
Post a Comment