সূচনা: অভিজিৎ রায়ের অনাকাঙ্খিত ও আকস্মিক
মৃত্যুর পর প্রায় মাস দেড়েক অতিবাহিত হলো। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এখনো এই
হত্যা রহস্যের তেমন কোনো কুল-কিনারা করে উঠতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন। বিষয়টি
বেশ দুঃখজনক। যাইহোক, আমাদের পক্ষ থেকে অতি সত্বর জড়িতদের খুঁজে বের
করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো ছাড়া কিছু করার নেই। সেই দাবি জানিয়েই
শুরু করছি।
অভিজিৎ রায়ের মৃত্যুর পরে তার অন্ধ ভক্ত ও অনুসারীদের অযৌক্তিক অতিশয়োক্তি সম্পর্কে আজ কিছু বলার ইচ্ছে রইল। 'মুক্তমনা'র প্রবর্তক, সম্পাদক, আয়োজক ও পুরোধা হিসেবে অভিজিৎ বাংলাদেশে নব্য-নিধর্মীদের মধ্যমনি ছিলেন। তাই তার আকস্মিক মৃত্যু হঠাৎ করেই নব্য-নাস্তিক্যবাদীদের এক গভীর শুন্যতায় ফেলে দেয়। সেই আকস্মিক শুন্যতা, শোক, মনস্তাপ থেকেই হোক কিংবা অন্তরে লুকিয়ে থাকা পৌত্তলিকতা থেকেই হোক – অভিজিতের মৃত্যুর পরে এই নব্য-নিধর্মী অনুসারী ও সমমনা সেক্যুলার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে শুরু হয় অযৌক্তিক আবেগের বিস্ফোরণ। অনেক জায়গাতে দেখলাম অভিজিৎকে সম্বোধন করা হচ্ছে- হাজার বছরের মধ্যে জন্মানো ক্ষণজন্মা এক আলোকিত মানুষ, বিস্তীর্ণ তৃণভূমির মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহীরূহ, বামুনদের দেশে এক অতিকায় মানব, অন্ধকারে নিমজ্জিত একপাল মানুষের মধ্যে আলো হাতে এক অগ্রপথিক, একবিংশ শতকের রেনেসাঁ, বাংলার সক্রেটিস, বাংলার গ্যালিলিও, মানবতাবাদী, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, মুক্তচিন্তার মানুষ, আধুনিক-প্রগতিশীল চিন্তার ধারক-বাহক-গবেষক ও বিশ্লেষক, যুক্তিবাদী, গবেষক, বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানমনষ্ক, উদার-বিজ্ঞানমনষ্ক, আমেরিকান প্যাটেন্টধারী, বুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষক, আমেরিকার কোনো এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, … ইত্যাদি হিসেবে। যেখানে মুক্তমনারা নিজেদের যুক্তিবাদী ও প্রমাণ-ভিত্তিক প্রাণী হিসেবে দাবী করে থাকেন – সেখানে তাদের এই অযৌক্তিক অতিশয়োক্তি আসলেই মনে বিস্ময় জাগায়!
অভিজিৎ-এর সার্বিক পরিচিতি খুবই সহজ – সে ছিল বাংলাদেশে নব্য-নাস্তিক্যবাদের পুরোধা। নব্য-নাস্তিক্যবাদী বলতে নিধর্মীদের সেই ধারাকেই বুঝাচ্ছি যারা রিচার্ড ডকিন্সের নেতৃত্বে বিজ্ঞানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নাস্তিক্যবাদের প্রচার ও প্রসারে নিবেদিত ছিল ও আছে – আর অভিজিৎ ছিলেন বাংলাদেশে এই ধারারই পুরোধা। এম আহমদের ভাষায় এদেরকেই বলে 'মিলিট্যান্ট নাস্তিক।'
এই নব্য-নিধর্মীদের আরেকটা গুণ হলো ধার্মিকদের ধরাশায়ী করা, বিশেষত বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়ে। অভিজিৎও গত ১৪-১৫ বছর ধরে এই-ই করে গেছেন। আর ধর্মের সমালোচক বলে দাবি করলেও সে-সহ মুক্তমনা ছিল মূলত ইসলাম-বিদ্বেষের সূতিকাগার, পাঠশালা ও প্রচারকেন্দ্র। অভিজিৎ-এর মূল পরিচয় আসলে এই দুটিই – অর্থাৎ বাংলাদেশে নাস্তিকতা প্রচারণার পুরোধা ও ইসলাম-বিদ্বেষীতা। এর বাইরের তথাকথিত ক্ষণজন্মা গুণীজন, গবেষক, বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানমনষ্ক, প্যাটেন্টধারী, মানবতাবাদী, ইত্যাদি, ইত্যাদি – এসব পরিচিতি তার আংশিক, অতিরঞ্জন, অসম্পূর্ণ ও মাঝেমধ্যে মিথ্যে পরিচয়। এই পরিচয়গুলোকে আংশিক, অসম্পূর্ণ ও মাঝেমধ্যে মিথ্যে বলার কারণগুলোকে এখানে সাজিয়ে লিখার চেষ্টা করছি।
অভিজিৎ বিজ্ঞানী কিংবা গবেষক ছিলেন না
যদিও অভিজিৎ বুয়েট থেকে পাশ করে সিঙ্গাপুরে পিএইচডি শেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ওখানে কোথাও কর্মরত ছিল – কিন্তু ঠিক কী কারণে তাকে নানা জায়গাতে বিজ্ঞানী বলে পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছে তা বুঝতে কষ্ট হয়। হ্যাঁ, অভিজিৎ উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন – কিন্তু এমন তো বাংলাদেশে অনেকেই নিয়েছেন – আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাত্রই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সবাই উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন, পিএইচডি করেছেন – কিন্তু তাই বলে তাকে যদি বিজ্ঞানী কিংবা গবেষক বলে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় – তবে সে অর্থে অভিজিৎ দেশে বিদেশে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার গবেষক/বিজ্ঞানীদের একজন মাত্র। কিন্তু তার অন্ধ অনুরক্তরা সেই অর্থে অভিজিৎকে বিজ্ঞানী বলছেন না নিশ্চয়! তাহলে কী অর্থে তারা তাকে বিজ্ঞানী বলছেন? সেই পিএইচডি আমলের পর থেকে অভিজিৎ তেমন কোনো মৌলিক গবেষণার সাথে জড়িত ছিল বলে জানা যায় না। এই দু'টো পেপার [1, 1a] ছাড়া অভিজিতের কোনো পাবলিকেশন খুঁজে পাওয়া যায় না। আর পেপার দু'টো তার পিএইচডি আমলের। তাহলে বিজ্ঞানী হিসেবে তার মৌলিক গবেষণাটি কী ছিল? কেউ কি জানাবেন?
অভিজিৎ রায়ের মৃত্যুর পরে তার অন্ধ ভক্ত ও অনুসারীদের অযৌক্তিক অতিশয়োক্তি সম্পর্কে আজ কিছু বলার ইচ্ছে রইল। 'মুক্তমনা'র প্রবর্তক, সম্পাদক, আয়োজক ও পুরোধা হিসেবে অভিজিৎ বাংলাদেশে নব্য-নিধর্মীদের মধ্যমনি ছিলেন। তাই তার আকস্মিক মৃত্যু হঠাৎ করেই নব্য-নাস্তিক্যবাদীদের এক গভীর শুন্যতায় ফেলে দেয়। সেই আকস্মিক শুন্যতা, শোক, মনস্তাপ থেকেই হোক কিংবা অন্তরে লুকিয়ে থাকা পৌত্তলিকতা থেকেই হোক – অভিজিতের মৃত্যুর পরে এই নব্য-নিধর্মী অনুসারী ও সমমনা সেক্যুলার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে শুরু হয় অযৌক্তিক আবেগের বিস্ফোরণ। অনেক জায়গাতে দেখলাম অভিজিৎকে সম্বোধন করা হচ্ছে- হাজার বছরের মধ্যে জন্মানো ক্ষণজন্মা এক আলোকিত মানুষ, বিস্তীর্ণ তৃণভূমির মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহীরূহ, বামুনদের দেশে এক অতিকায় মানব, অন্ধকারে নিমজ্জিত একপাল মানুষের মধ্যে আলো হাতে এক অগ্রপথিক, একবিংশ শতকের রেনেসাঁ, বাংলার সক্রেটিস, বাংলার গ্যালিলিও, মানবতাবাদী, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, মুক্তচিন্তার মানুষ, আধুনিক-প্রগতিশীল চিন্তার ধারক-বাহক-গবেষক ও বিশ্লেষক, যুক্তিবাদী, গবেষক, বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানমনষ্ক, উদার-বিজ্ঞানমনষ্ক, আমেরিকান প্যাটেন্টধারী, বুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষক, আমেরিকার কোনো এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, … ইত্যাদি হিসেবে। যেখানে মুক্তমনারা নিজেদের যুক্তিবাদী ও প্রমাণ-ভিত্তিক প্রাণী হিসেবে দাবী করে থাকেন – সেখানে তাদের এই অযৌক্তিক অতিশয়োক্তি আসলেই মনে বিস্ময় জাগায়!
অভিজিৎ-এর সার্বিক পরিচিতি খুবই সহজ – সে ছিল বাংলাদেশে নব্য-নাস্তিক্যবাদের পুরোধা। নব্য-নাস্তিক্যবাদী বলতে নিধর্মীদের সেই ধারাকেই বুঝাচ্ছি যারা রিচার্ড ডকিন্সের নেতৃত্বে বিজ্ঞানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নাস্তিক্যবাদের প্রচার ও প্রসারে নিবেদিত ছিল ও আছে – আর অভিজিৎ ছিলেন বাংলাদেশে এই ধারারই পুরোধা। এম আহমদের ভাষায় এদেরকেই বলে 'মিলিট্যান্ট নাস্তিক।'
এই নব্য-নিধর্মীদের আরেকটা গুণ হলো ধার্মিকদের ধরাশায়ী করা, বিশেষত বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়ে। অভিজিৎও গত ১৪-১৫ বছর ধরে এই-ই করে গেছেন। আর ধর্মের সমালোচক বলে দাবি করলেও সে-সহ মুক্তমনা ছিল মূলত ইসলাম-বিদ্বেষের সূতিকাগার, পাঠশালা ও প্রচারকেন্দ্র। অভিজিৎ-এর মূল পরিচয় আসলে এই দুটিই – অর্থাৎ বাংলাদেশে নাস্তিকতা প্রচারণার পুরোধা ও ইসলাম-বিদ্বেষীতা। এর বাইরের তথাকথিত ক্ষণজন্মা গুণীজন, গবেষক, বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানমনষ্ক, প্যাটেন্টধারী, মানবতাবাদী, ইত্যাদি, ইত্যাদি – এসব পরিচিতি তার আংশিক, অতিরঞ্জন, অসম্পূর্ণ ও মাঝেমধ্যে মিথ্যে পরিচয়। এই পরিচয়গুলোকে আংশিক, অসম্পূর্ণ ও মাঝেমধ্যে মিথ্যে বলার কারণগুলোকে এখানে সাজিয়ে লিখার চেষ্টা করছি।
অভিজিৎ বিজ্ঞানী কিংবা গবেষক ছিলেন না
যদিও অভিজিৎ বুয়েট থেকে পাশ করে সিঙ্গাপুরে পিএইচডি শেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ওখানে কোথাও কর্মরত ছিল – কিন্তু ঠিক কী কারণে তাকে নানা জায়গাতে বিজ্ঞানী বলে পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছে তা বুঝতে কষ্ট হয়। হ্যাঁ, অভিজিৎ উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন – কিন্তু এমন তো বাংলাদেশে অনেকেই নিয়েছেন – আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাত্রই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সবাই উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন, পিএইচডি করেছেন – কিন্তু তাই বলে তাকে যদি বিজ্ঞানী কিংবা গবেষক বলে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় – তবে সে অর্থে অভিজিৎ দেশে বিদেশে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার গবেষক/বিজ্ঞানীদের একজন মাত্র। কিন্তু তার অন্ধ অনুরক্তরা সেই অর্থে অভিজিৎকে বিজ্ঞানী বলছেন না নিশ্চয়! তাহলে কী অর্থে তারা তাকে বিজ্ঞানী বলছেন? সেই পিএইচডি আমলের পর থেকে অভিজিৎ তেমন কোনো মৌলিক গবেষণার সাথে জড়িত ছিল বলে জানা যায় না। এই দু'টো পেপার [1, 1a] ছাড়া অভিজিতের কোনো পাবলিকেশন খুঁজে পাওয়া যায় না। আর পেপার দু'টো তার পিএইচডি আমলের। তাহলে বিজ্ঞানী হিসেবে তার মৌলিক গবেষণাটি কী ছিল? কেউ কি জানাবেন?
No comments:
Post a Comment