ছোট ছোট কিছু কথা।
মন দিয়ে পড়ো তোমার জীবনে কাজে লাগতে পারে।
কথাটি একেবারে ছোটবেলার নয়।
কথাটি শৈশবের পরের।ঠিক এখন আমরা যে বয়স পার করছি সেটা। মহল্লার বন্ধুদের মাঝেও, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহপাঠীদের মাঝেও এ বয়সের একটি বিশেষ বিষয় লক্ষ্য করবে।
এটা যেমন তোমার মধ্যেও থাকতে পারে, থাকতে পারে বন্ধুদের মধ্যেও।আবার কোনো কোনো দুঃসাহসী বন্ধুর কারণে তোমার মনে এ বিষয়টির রেখাপাত কিছুটা শক্ত হয়েও ঘটতে পারে। এটি এ বয়স ও সময়েরই একটি বিষয়। এতে অবাক বা বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। এতে কেবল আছে কিছু সতর্কতার ব্যাপার। কিছু স্থির বুদ্ধি ও সুচিন্তার ব্যাপার।
এ বয়সে জীবন ও মনে এক ধরনের পরিবর্তন শুরু হতে থাকে। ভাবনা ও কথার এক জগত থেকে আরেক জগতে গিয়ে তুমি পড়তে থাকো। দেখবে এতদিন যেভাবে ভাবতেই জানোনি, দেখতেও চাওনি কোনো কোনো বন্ধু কিছু কিছু দৃশ্য এখন সেভাবে তোমাকে জানাবে. সেভাবে তোমাকে দেখাবে।
এসব ক্ষেত্রে তুমি কী করবে?
এর কিছু অংশ তো স্বাভাবিক। জীবন ও চিন্তায় কিছু কিছু নতুন অনুভূতি আসতেই পারে। কিন্তু সে সব অনুভূতি নিয়ে অতিরিক্ত সময় দেয়ার কোনো মানে নেই। সে সব অনুভূতি ও বিষয় নিয়ে বাজে চিন্তার মাঝে, বাজে সঙ্গ ও গল্পর মাঝে ডুবে যাওয়ার কোনো অর্থ নেই।
অত্যন্ত যত্নের সঙ্গেই এসব পরিস্থিতিতে নিজেকে সংযত রাখবে। আগলে রাখবে। বখে যাওয়া কোনো বন্ধুর কথায় নিজের চিন্তা ও কাজের গতিপথ ঠিক করবে না। একদম না। এ বয়সে কোনো পরিবর্তন, কোনো নতুন অনুভূতির ক্ষেত্রে এটাই হবে তোমার জন্য দরকারী প্রথম সতর্কতা।
এখন এ বিষয়ে দ্বিতীয় দরকারী কথাটি হচ্ছে, তোমার চেনা জানা সমবয়সী ও গুরুজনদেরও কারো কারো কাছ থেকেও হঠাৎ হঠাৎ এমন কিছু আচরণ প্রকাশ পেয়ে যেতে পারে যেটা তোমার কাছে রহস্যপূর্ণ মেনে হতে পারে। কোনো কোনো আচরণে বিরক্তও হতে পারো। এসব ক্ষেত্রে তুমি নিজে কোনো প্রিতিক্রিয়া না জানিয়ে সময় নষ্ট না করে তোমার আব্বা-আম্মার কাছে বিষয়টি জানিয়ে দাও। তুমি কী করবে সে বিষয়ে তারাই তোমাকে শোভন পরামর্শ দিতে পারেন।
তুমি নিজে যদি তোমার শরীর ও অনুভূতিগত কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করে অবাক হতে থাকো তাহলেও সময় নষ্ট না করে বিশ্বস্ত গুরুজনদেরকে লজ্জা ভেঙ্গে বিষয়টি জানাও। তোমার অস্থিরতা কমে যাওয়ার পথ বের হয়ে যাবে। যে বিষয়টি নিয়ে নিজে নিজে উদ্বিগ্ন হচ্ছো, একা একা গুমরে মরছো সে বিষয়টিকে তোমার একার মধ্যে আটকে না রেখে মুরব্বীদের সহায়তা নেয়ার চেষ্টা করো। তোমার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে মনে করি।
তৃতীয় কথাটির দরকার না পড়লেই ভালো। সেটি হচ্ছে বয়স একটি পর্যায়ের যাওয়ার পর বিপরীত শ্রেণীর কোনো বন্ধু বা সহপাঠীর প্রতি তোমার মনের দুর্বলতা সৃষ্টি হয়ে যেতে পারে। তাকে ভালো লাগতে একটু বেশি রকম ভালো লাগার পর্যায় শুরু হয়ে যেতে পারে। এটা তখনই ক্ষতিকর হবে যখন বুঝতে পারবে তাকে কয়েকদিন না দেখলে তোমার খারাপ লাগছে কিংবা তার ব্যাপারে তোমার মনে যে ভাবনা রয়েছে তা কেউ জেনে ফেললে তুমি লজ্জা পাবে।
এ ধরণের পরিস্থিতে তোমার দেরি করা ঠিক হবে না। লজ্জা ভেঙ্গেই তোমার মনটাকে খুলে আব্বা-আম্মা কাউকে বা ভাইয়া-আপাদের কাউকে বলে ফেলো। তুমি কতটুকু ভুল করছো, সে ভুল থেকে কিভাবে বের হয়ে আসতে পারো সে পথ তারাই বলে দেবেন। তুমি হয়তো সহজেই একটি বড় বিপদ থেকে বেঁচে যাবে।
এছাড়াও মনে রাখতে হবে,
মনের সংকোচ ও লজ্জা থেকে অনেকে আবার ভুল পথে পা বাড়ায়। যার কাছে বলা উচি নয়, সমস্যাটির কথা বলে ফেলে তাকে। তখন ভুল কাজে আরো উৎসাহ পাওয়ার মতো ‘দুর্ঘটনা’ ঘটতে থাকে। এসব দুর্ঘটনাকে শুরুর দিকে মজার বিষয় মনে হলেও পরে মজাটা আর থাকে না। পরে বিষয়টি ভারী ও সমস্যাপূর্ণ একটি বিষয়ে পরিণত হয়ে যায়।
তোমাকে আরো একটি বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। সেটি হচ্ছে গল্প, উপন্যাস, নাটক, সিনেমা, আর তোমার বাস্তব জীবন আসলে এক নয়। পাঠক-ফ্যানদের ভালোলাগার জন্য অনেক পেইজে এডাল্ট ছবি অনেক ধরনের চটি গল্প ছেড়ে দেওয়া হয়। সে সব গল্পে ফূর্তি ও থ্রিল থাকে। আবেগ উত্তেজনা থাকে। পড়ে ও দেখে মজা পেলেও নিজের জীবনে সে গল্পটির অনুকরণ করো না। বিপদ ঘটার ঝুঁকিই তাহলে বেশি থাকবে। দু-তিন মিনিটের বাজে চটি গল্প বা ছবির সঙ্গেদ তোমার জীবনের তাল মিলাতে গেলেই প্যাঁচ গোছ লেগে যেতে পারে।
নিজের ইচ্ছা অনচ্ছিয়ায় ছোট খাটো গোপন বিষয়ের জন্ম হতে পারে। গোপন দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। সেই দুর্ঘটনাকে না বাড়ানোর পথই হচ্ছে আপনজন কারো কারো কাছে মনটাকে খুলে দেয়া।
আসলে তোমার আমার বয়সের কোনো গোপন অধ্যায় থাকতে নেই। আব্বা-আম্মার জানার মধ্যেই যেন সব থাকে। লজ্জা বা ভয়ে মনের সংকট, মনের উল্লাস গোপন করার পথে থাকলে বিপদের আশংকাই বেশি।
তোমাকে তো সুন্দর জীবন নিয়ে বাঁচতে হবে। তুমি তো এটা বুঝো।
তাই ভুল পথে তুমি হাঁটতে পারো না।
ভালো লাগলে তোমার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলো না কিন্তু।
No comments:
Post a Comment